নিউজ ডেস্ক:
পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগাতে মাগুরা জেলায় শুরু হয়েছে নানা ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। গড়ে তোলা হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চল। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে নতুন সড়ক, বাইপাস সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও কৃষকরা নতুন কর্মকাণ্ডে উজ্জীবিত।
মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মাগুরা জেলাতে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছে। মাগুরার রাজধরপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। ৫১০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাগুরা-ধলহরা-নড়াইল দুই লেনের একটি সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান। এতে মাগুরার সঙ্গে মহম্মদপুর উপজেলা ও নড়াইল জেলার যোগাযোগ আরও সহজ হবে। এসব কাজের ফলে মাগুরায় বিনোয়োগ সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর কারণে মাগুরাসহ এ অঞ্চলের পণ্য পরিবহনে ফেরিঘাটের বিড়ম্বনা থেকে নিস্তার পাবে মানুষ। বর্ষা, কুয়াশার মতো প্রাকৃতিক কারণে যে বাড়তি সময় ফেরিঘাটে নষ্ট হয়, তা আর হবে না। অর্থনৈতিক ক্ষতি ও দুর্ভোগ দুটোই কমাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, মাগুরার সবজি, লিচুসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য দ্রুত ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় পৌঁছাতে পারবে। শিবরামপুর গ্রামের লিচু চাষি ইদ্রিস আলী বলেন, শুধু ফেরিঘাটের কারণে তাঁকে কম দামে লিচু বিক্রি করতে হয়। এখন তিনি নায্য দাম পাবেন বলে আশা করছেন। মাগুরা একতা পাইকারি কাঁচাবাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, এতদিন ফেরিঘাটের কারণে মাগুরার ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারেননি। এবার নতুন সুযোগ এসেছে ব্যবসায়ীদের সামনে। মাগুরা শহরের আতর আলী সড়কের কাপড় ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন বলেন, সেতুর ফলে তাঁদের ব্যবসাও সুবিধা পাবে।
মাগুরা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মিরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু মাথায় রেখে ইতোমধ্যে মাগুরাতে ব্যাপক কার্যক্রম চলছে। অভ্যন্তরীণ একাধিক বাইপাস সড়ক তৈরির কাজ সমাপ্তির পথে। চলছে রেললাইনের কাজ। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে মাগুরা থেকে ছেড়ে যাওয়া রেল পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকা পৌঁছবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান মাগুরার অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।
মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, শুধু যাত্রী পরিবহন ও মালপত্র আনা-নেওয়াই নয়; পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মাগুরায় ইতোমধ্যে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। এ ছাড়া এ সেতু চালুর ফলে অনেক শিল্প উদ্যোক্তা মাগুরায় শিল্পায়নে আগ্রহ প্রকাশ করছেন, যা জেলার কর্মসংস্থানের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে।