নিউজ ডেস্ক:
পদ্মা সেতুর রেললাইন প্রকল্পে ত্রুটি ধরা পড়ার পর যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল অবশেষে তার অবসান হয়েছে। কোনো খুঁটি না ভেঙে শুধু পাইল বাড়িয়ে দিয়ে ‘রি-ডিজাইন’ করা হয়েছে। এতে কোনো খুঁটি ভাঙা হচ্ছে না। তবে জাজিরা প্রান্তে বাড়ানো হচ্ছে একটি পাইল যা কাঠামো লোডকে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের (পিবিআরএলপি) পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
গত সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে আনুভূমিক (হরাইজন্টাল) ও উলম্ব (ভার্টিক্যাল) দুই দিকেই রেলওয়ের কাজে ত্রুটি ধরা পড়ে। আগের ঐ নকশায় দেখা যায়, দেশের সড়কপথের হেডরুমের ক্ষেত্রে আনুভূমিকে ১৫ মিটার ও উলম্বে ৫ দশমিক ৭ মিটার পরিমাপকে স্ট্যান্ডার্ড মানা হলেও পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পে তা মানা হয়নি। এ অবস্থায় সেতুতে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও দ্বিতল বাস প্রবেশ করতে পারবে না—এমন আশঙ্কা থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ রেল প্রকল্পের কাজে আপত্তি জানায়।
পদ্মা রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, রেল প্রকল্পের নকশা নতুন করে করতে হয়েছে। তবে কোথাও কোনো খুঁটি বা পাইল ভাঙা পড়বে না। জাজিরাপারে শুধু পাইলের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় উচ্চতা ও প্রস্থ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ গত ৩১ ডিসেম্বর এ নতুন ডিজাইনে সম্মত হয়ে চিঠিও দিয়েছে। এখন সেখানে পাইল বাড়িয়ে দিয়ে কাজ শুরু করতে আর কোনো বাধা নেই। উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর পুরো কাঠামো দৃশ্যমান হয়। সংযুক্ত হয় পদ্মার এপার-ওপার, মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুর নিচ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে রেললাইন। পুরো রেল প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১৭৩ কিলোমিটার। যাবে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত। পদ্মা রেল প্রকল্পকে পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম প্যাকেজে ঢাকার কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া স্টেশন পর্যন্ত তিন কিলোমিটার ডুয়েলগেজ (ডিজি) রেলপথ নির্মিত হবে। দ্বিতীয় প্যাকেজে গেন্ডারিয়া থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৬ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও চারটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় প্যাকেজে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত ৪২ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও পাঁচটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। চতুর্থ প্যাকেজে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ ও ১০টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। পদ্মা সেতু যেদিন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে, সেদিনই রেল চলাচলে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশ খুলে দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি অংশগুলো খুলে দেওয়া হবে।