নিজস্ব প্রতিবেদক:
কাল রোববার থেকে গার্মেন্টসসহ শিল্প-কারখানা খোলার সরকারী নির্দেশনা জারি করার পর ঢাকাগামী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও শনিবার সকাল থেকে নাটোর জেলা সদর সহ জেলার বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে দেশে যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করায় যাত্রীবাহি পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু ও নারীসহ বিভিন্ন বয়সী যাত্রীরা দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে চড়ে বসছেন বিভিন্ন ধরণের ট্রাকে, সিএন্ডজি, ভুটভুটি, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার এমনকি মোটরসাইকেলে। তারা এসব যানে করে ঢাকাসহ আশে-পাশের শিল্পাঞ্চল জেলাগুলোতে যাচ্ছেন। জীবনের ঝুঁকির পাশাপাশি গাদাগাদি করে এসব যানে পাড়ি দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য ঝুকিতেও পড়ছেন তারা। দেখে মন হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাকে মানুষই যেন পণ্য।
এদিকে যাত্রিবাহি যানচলাচল বন্ধ থাকায় এসব যানে জনপ্রতি প্রকার ভেদে দ্বিগুন ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে। যানবাহনের প্রকার ভেদে গাজীপুর বাইপাল ও চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা। বিধি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সরকারী এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মস্থলে ফিরতে কর্মজীবীরা যেমন গুনছেন মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া। তেমনই পোহাচ্ছেন দুর্ভোগ।
৫ আগষ্টের আগে কর্মস্থলে যোগ না দিলে চাকরির সমস্যা হবেনা -জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর এমন ঘোষনাও কেউ আমলে না নিয়ে ঝুঁকি নিয়েই কর্মস্থলে ছুটছেন।
এদিকে যাত্রী পরিবহন ও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে বাসস্ট্যান্ডসহ মহাসড়কে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য সংশ্লিষ্টদের দেখা যায়নি। ফলে যাত্রী পরিবহনের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় পরিবহন শ্রমিকর। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয় ঢাকাগামী যাত্রিদের।
রাইসুল ইসলাম নামে এক ঢাকা যাত্রি জানান, ঈদে বাড়ি এসেছিলেন । এখন জীবিকার প্রয়োজনে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছি। গাজীপুরের বাইপাল পর্যন্ত যেতে তাকে জনপ্রতি ৮০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে এই ট্রাকে উঠতে হয়েছে।গোটা পথ দাঁড়িয়ে যেতে হবে।
অপরযাত্রি হামিদুল জানান, আমি যে ট্রাকে যাচ্ছি সেটাতে কম করে হলেও ৭০ জন যাত্রি রয়েছেন। এদিকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা এবং অপরদিকে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে মাথার ওপর ত্রিপল টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গরমে সবাই অস্থির হয়ে উঠেছেন। এভাবে গাদগাদি করে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কঠিন। তাই আতংক নিয়েই কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে।
চামেলী বেগম নামে এক নারী যাত্রি জানান, মহিলা বলেও তাদের রেহাই মিলছেনা। সরকার গার্মেন্টস সহ শিল্প-কারখানা খুলে দেয়ার আগে গণ পরিবহন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিলে তাদের এই ভোগান্তিতে পড়তে হতোনা।