নিউজ ডেস্ক:
পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করতে চাচ্ছে সরকার। এর ফলে বাংলাবান্ধা বন্দর পর্যন্ত যাত্রী ও পণ্যপরিবহন সহজ হবে। একই সঙ্গে রেলপথটির মাধ্যমে চতুর্দেশীয় রেলসংযোগ স্থাপিত হবে। যার ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কনটেইনার সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে। ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথের নির্মাণ নিয়ে গতকাল বুধবার যাচাই কমিটির সভা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর আমাদের সময়কে বলেন, রেলপথটি নির্মাণের প্রক্রিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। বৈঠকে নতুন পথটি ব্রডগেজ নাকি ডুয়েল গেজ হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এ রেলপথ নির্মাণ করতে পারলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
জানা গেছে, দেশের উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর হিসেবে বাংলাবান্ধা দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়। এতে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এ অঞ্চলে সড়ক নেটওয়ার্কের আয়ু কমে যাচ্ছে। এই এলাকার সড়ক নেটওয়ার্ক রপ্তানি-আমদানিভিত্তিক স্থলবন্দর কার্যক্রমের জন্য যথেষ্ট নয়। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক যাত্রী ও মালবাহী পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাবিত বাংলাবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেল যোগাযোগ ভারতীয় রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের গেটওয়ে শিলিগুড়ি থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। নেপালের সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট কাকরভিটা এবং ভুটানের ফুয়েন্টশোলিং থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের দূরত্ব যথাক্রমে ৩৮ কিলোমিটার এবং ১৪০ কিলোমিটার। এ ছাড়া কাছাকাছি ভারতীয় রেলস্টেশন রাঙ্গাপানি ও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের দূরত্ব যথাক্রমে প্রায় ৭ কিলোমিটার ও ১১ কিলোমিটার।
তাই এ প্রকল্প ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক, বিমসটেক, বিবিআইএনের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামের অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে পারবে। এসব কারণে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর পর্যন্ত একটি নতুন রেললাইন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিসিআইএল-জেপিজেডবিডি-ডিএমইসি-জেপিজি মালয়েশিয়ার মাধ্যমে এ বছরের জুনে শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের পিডিপিপি নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে গত ৬ ফেব্রুয়ারি।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে ৪৬.৬০ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ১৮.৫৮ কিলোমিটার লুপ ও সাইডিং লাইন নির্মাণ। এর মধ্যে ৬টি প্রধান সেতু এবং ১২টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে। প্রকল্পের অধীনে ৫৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ৬টি স্টেশনে কম্পিউটার বেইজড সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং সিস্টেম থাকবে।