শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১ লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১ লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা

নিউজ ডেস্ক:
প্রচলন আছে, রাজধানী ঢাকা নাকি জাদু আর মায়ার শহর। এ মায়ার শহরে এসে একবার বসবাস শুরু করলে তার আর নিজ এলাকায় ফিরে যেতে মন চায় না। তাই বেকার, ভাগ্যান্বেষী, বিদ্যান্বেষীসহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের ‘স্বপ্ন গড়ার শহর’ এই ঢাকা। প্রায় এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটারের এ শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস। দিন দিন তা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা মহানগরের মোট জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। এ কারণে ড্যাপে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সমস্যা সমাধানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনায় (২০১৬-২০৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ৫৫টি স্থান নির্দিষ্ট করে এক লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে

জানা গেছে, নির্ধারণ করা ৫৫টি স্থানে সাশ্রয়ী মূল্যের ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। প্রথমে ড্যাপের অধীন চারটি এলাকায় পাইলট প্রকল্প বা পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত আছে। ওই চার এলাকার মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ, মিরপুর ও শ্যামপুরের কদমতলী।

dhakapost

পাখির চোখে ঢাকা শহর / ছবি- সংগৃহীত

এক পরিসংখ্যানের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকায় বর্তমানে দুই কোটিরও বেশি মানুষ বাস করে। প্রতি বছর ঢাকা শহরে ছয় লাখ ১২ হাজার মানুষ যুক্ত হচ্ছে। দিনে যা এক হাজার ৭০০ জন। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা ১১তম। কিন্তু আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার হিসাবে ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ। ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই শুমারিতে ঢাকা শহরে জনসংখ্যা মেলে মাত্র ১৬ লাখ।

সংগঠনটির অপর এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ টাকা ব্যয় করেন বাসার ভাড়া পরিশোধে।

নির্ধারণ করা ৫৫টি স্থানে সাশ্রয়ী মূল্যের ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। প্রথমে ড্যাপের অধীন চারটি এলাকায় পাইলট প্রকল্প বা পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত আছে। ওই চার এলাকার মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ, মিরপুর ও শ্যামপুরের কদমতলী

এ প্রসঙ্গে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি হচ্ছে বাসস্থান। শহরের পরিকল্পনা প্রস্তাব, নীতিনির্দেশনা, বিধিবিধান তৈরি হচ্ছে সংখ্যালঘিষ্ঠ উচ্চবিত্তের চাহিদা ও রুচির কথা বিবেচনা করে। অথচ, মোট জনসংখ্যার বড় অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নাই। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (২০১৬-৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্থান নির্দিষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নগর বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ড্যাপ প্রস্তুত করেছি। আগের ড্যাপের সঙ্গে নতুন করে অনেক কিছু সংযুক্ত হয়েছে। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই ড্যাপের বাস্তবায়ন শুরু হবে।

dhakapost

আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার হিসাবে ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ / ছবি- সংগৃহীত

ড্যাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজউকের অন্তর্ভুক্ত এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মোট ৪৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। পরে জরিপ করে প্রতিটি ব্লকের জনসংখ্যার ধারণক্ষমতা, সড়ক অবকাঠামো, নাগরিক সুবিধা এবং সেখানে উন্নয়নের ধরনের ওপর ভিত্তি করে আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হবে।

ঢাকার মোট জনসংখ্যার বড় অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত। তাদের আবাসনের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নাই। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (২০১৬-৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্থান নির্দিষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছেআশরাফুল ইসলাম, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপ পরিচালক

রাজউকের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় দুই হাজার ১৯৮ কিলোমিটার জলাধার সিএস রেকর্ড অনুযায়ী উদ্ধার করে সচলেরও সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসব এলাকাকে বিনোদন স্পটে পরিণত করার কথা উল্লেখ আছে।

বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) পরিকল্পিত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে উন্নয়নমুখী নানা ছক সাজানো হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে ঢাকার সার্বিক চিত্র। নতুন ড্যাপের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০ বছর।

dhakapost

ঢাকা মহানগরের মোট জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত / ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা মহানগরের জন্য প্রস্তুত করা বিদ্যমান বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০১০ সালের ২২ জুন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এর মেয়াদ ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ২০১৫ সালের মার্চে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০১৬-২০৩৫ প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।

রাজউক কর্তৃক বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা আগামী ২০ বছরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, যার আওতাধীন এলাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩৫ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার প্রক্ষেপণ জনসংখ্যা ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখ। ড্যাপের প্রকল্প এলাকাকে ছয়টি স্বতন্ত্র প্রধান অঞ্চল এবং ৭৫টি উপ-অঞ্চলে বিভক্ত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।

আরও দেখুন

রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে  ১৫ভরি স্বর্ণের ও 

১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,,  নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার  পথে পথ …