নিজস্ব প্রতিবেদক: না ফেরার দেশে চলে গেলেন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী যোদ্ধা সিংড়ার নুর মোহাম্মদ। সোমবার সকালে তিনি তাঁর নিজ বাড়ী উপজেলার কলম ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামে মেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। তিনি ১৯১৯ সালে ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৃত দবির উদ্দিন।
এলাকাবসী জানান,তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পুলিশি হুলিয়া জারির কারণে ১৯৪৫ সালেরে আসাম থেকে পালিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে আসেন। পরে নাটোর জেলার বড়াইগ্রম উপজেলার মৌখাড়া গ্রামে বসবাস করা শুরু করেন। সেখানে বিশেষ সুবিধা না করতে পারায় ৩০ বছর আগে বর্তমানের এই বাড়ি কলিনগরে চলে আসেন। কৃষি কাজ করেই তিনি সারা জীবন নির্বাহ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে তিন মেয়ের বাবা ছিলেন। স্ত্রী মারা গিয়েছেন্। এরপর থেকেই নাটোরের প্রত্যন্ত অঞ্চল সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামে বসবাস করতে শুরু করেন। ছেলেরাও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি তার ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে কীভাবে যুক্ত ছিলেন তার কথাগুলো অল্প বিস্তর সবার সাথে শেয়ার করেছেন। জীবন সায়াহ্নে স্পষ্টভাবে কথা না বলতে পারার কারণে কাগজে লিখে জানাতেন নুর মোহাম্মদ । তাঁর ছেলেরাও তেমন কিছু জানেননা। তারা শুধু জানেন তার বাবার কাছে অনেক বড় বড় মানুষ আসতেন। নেতাজি সুভাষ বসুর বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তার কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়েছিল। কমরেড মোজাফফর আহমেদের সাথেও তার যোগাযোগ ছিল। ব্রিটিশ বিরোধী এই বিপ্লবী বীরের শেষ জীবন কাটে খুব দরিদ্রতা আর দুঃখ কষ্টের মাঝে । তার মত এতো কষ্ট করা মানুষ জীবন কাউকে দেখেনি । জীবনে তিনি অনেক কষ্ট নির্যাতন সহ্য করেছেন । যুবক বয়সে তিনি লাঠি খেলতেন। একাই একশত জনকে পরাজিত করতে পারতেন তিনি। অনেক সাহসী একজন যোদ্ধা ছিলেন নুর মোহাম্মদ । ব্রিটিশ পুলিশ কে তিনি লাঠি পেটা করেছিলেন নুর মোহাম্মদ । এমন একজন মানুষের নিভৃতে চলে যাওয়া সত্যিই আশ্চর্যের।