নিউজ ডেস্ক:
রাজধানী শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থার পর্যালোচনা করতে চিকিৎসার্থে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গতকাল ৮ জুন রাত আটটায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জুম মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনার শুরুতেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিউরোসার্জন, কিডনি, নিউরোলজি ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞরা মোহাম্মদ নাসিমের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও ফাইন্ডিংস সম্পর্কে ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের অবহিত করেন।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডাক্তার কনক কান্তি বড়ুয়া সোমবার রাত ১১টায় জানান, হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছ থেকে মোহাম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তাতে বোঝা যায়, তার কোনো উন্নতি হয় নাই। আগের মতো এখনও ক্রিটিক্যাল অবস্থাতেয় আছেন। তিনি নিজে থেকে কোনো শ্বাস-প্রশ্বাস নেন না। ভেন্টিলেটর মেশিনের সহায়তায় তিনি শ্বাস-প্রশ্বাস নেন।
ইতিবাচক দিক একটাই আছে সেটা হচ্ছে তার হার্ট সচল রয়েছে। মেশিন খুলে দিলে স্বভাবতই হার্টের অবস্থাও খারাপ হয়ে যাবে। ভেন্টিলেটর মেশিনের মাধ্যমে তার উচ্চ রক্তচাপ ও পালস (৭৫ থেকে ৯০) নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। উনার কিডনির অবস্থা খারাপ।
তার পরিবার চাচ্ছে চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে। যতক্ষণ হৃদপিণ্ড সচল আছে ততক্ষণ চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মতামত দেন বলে তিনি জানান।
এর আগে, বিকেলে সোমবার (৮ জুন) বিকেলে অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছিলেন, ‘গত ৭২ ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তার শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন’।
গত ৬ মে বিকেলেও অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া একই ধরনের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘উনার কন্ডিশন ভালো নয়, ক্রিটিকাল। ৭২ ঘণ্টা পার না হলেও কিছু বলা যাচ্ছে না’। ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তিনি জানান নাসিমের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকালে শুক্রবার (৫ জুন) ভোরে তার ব্রেন স্ট্রোক হয়। এতে মস্তিষ্কে বড় ধরনের রক্তক্ষরণ হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালের নিউরো সার্জন অধ্যাপক রাজিউল হকের তত্ত্বাবধানে সফল অস্ত্রোপচার শেষে তাকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিনে স্থানান্তর করা হয়।
১ জুন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর আগে শারীরিক ‘দুর্বলতা’ নিয়ে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম।
এদিকে গত রাত আনুমানিক ১০টার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে মোহাম্মদ নাসিম মারা গেছেন বলে গুজব ওঠে।