নিউজ ডেস্ক:
যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিন বাহিনী প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিতসংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৪ জন সেনা, ২ জন নৌ এবং ২ জন বিমান বাহিনীর সদস্যকে ২০২১-২০২২ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করবেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিকাল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতে অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের ¯িপকার, প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও মন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, ডেপুটি স্পিকার, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, সংসদ সদস্য (ঢাকা এলাকার), সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, তিন বাহিনীর সাবেক প্রধান, ২০২২ সালে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তি, স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারী, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তাদের উত্তরাধিকারী, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি স¤প্রচার করবে।
দিবস উপলক্ষে তিন বাহিনী প্রধান নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, তাদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা দেবেন। ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
ঢাকার বাইরে অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ আজ বেলা ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাঁটিসমূহে অবস্থান/নোঙ্গরকৃত অবস্থায় রাখা হবে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে গতকাল রবিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। বাংলাদেশ বেতার আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশেষ দুর্বার অনুষ্ঠান স¤প্রচার করবে। বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।