নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে নাটোর চিনি মিলে মোট উৎপাদন খরচ পড়েছে ১২৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ পড়েছে ৪০০ টাকা। একই সঙ্গে এ বছর মাড়াই মৌসুমে চিনি উৎপাদনও অনেক কম হয়েছে। গত ৩৭ বছরে মাত্র তিন থেকে চার বছর লাভের মুখ দেখলেও বর্তমানে লোকসানে রয়েছে জেলার এই বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।
নাটোর সুগার মিলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক (অর্থ) জামাল হোসেন বলেন, চলতি ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৪২ দিনে ৩ হাজার ২৫ টন (৩০ লাখ ২৫ হাজার কেজি) চিনি উৎপাদন করা হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২২ কোটি টাকা। আর মোলাসেস আছে ৬ কোটি টাকার। চিনি আর মোলাসেস মিলিয়ে বর্তমান বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। আর উৎপাদন খরচ হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৪২ দিন উৎপাদন চলেছে। এই সময়ে মিলের উৎপাদিত ৩ হাজার ২৫ টন চিনি আর মোলাসেসের বর্তমান বাজার মূল্য ২৮ কোটি টাকা। এ বছর নাটোর সুগার মিলে মাড়াই মৌসুমে চিনি উৎপাদন অনেক কম হয়েছে বলেও জানান তিনি। এবার মাড়াই মৌসুমে মিলের খরচ বিবরণী হচ্ছে- কাঁচামাল ক্রয় বাবদ ১৯ কোটি টাকা, ইক্ষু সেন্টারের আখ লোড-আনলোড ও আনুসঙ্গিক খরচ ৬০ লাখ টাকা, উৎপাদন সামগ্রী খরচ ৮৭ লাখ টাকা, মৌসুমি শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, স্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, বীমা ৩০ লাখ টাকা, মিলের পুরাতন যন্ত্রাংশ ও গ্যারেজের যন্ত্রাংশসহ মেরামত খরচ ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ৩৩ লাখ টাকা।
তার দাবি, অব্যবস্থাপনা নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রপাতির কারণেই উৎপাদন খরচ হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা। এতে করে এবারেও বড় লোকসানে পড়েছে মিলটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিলের এক শ্রমিক নেতা জানান, সঠিক নজরদারির অভাব, মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রাংশ আর অব্যবস্থানাই লোকসানের মূল কারণ। এছাড়াও কাঁচামালের সরবরাহ না থাকায় অব্যাহতভাবে লোকসান গুনছে মিলটি।
১৯৮৫ সালে নাটোর পৌর শহরের জংলী এলাকায় নাটোর সুগার মিলটি স্থাপন করা হয়। এ পর্যন্ত দুই-তিনবার লাভ হলেও প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হয় মিলটিকে।
প্রান্তিক চাষিদের দাবি, সঠিক সময়ে আখের পাওনা টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। কর্মকর্তাদের কাছে বার বার ধরণা দিতে হয়। পাওয়ার ক্রাসারে আখ বিক্রি করলে টাকার জন্য ঘুরতে হয় না।