নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে মনিরুল ইসলাম নামের একজনকে আটক করেছে র্যাব। আজ ২৬ নভেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে র্যাব সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান,গতকাল ২৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার শাহিন আলম ও নাসিম নামের দুই অভিযোগকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মনিরুল কে তার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার নন্দিকুজা দয়রামপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মনিরুলকে আটক করা হয়। আটক মনিরুল বাগাতিপাড়া উপজেলার নন্দিকুজা এলাকার কফির উদ্দিনের ছেলে।
ক্যাম্প কমান্ডার ফরহাদ হোসেন আরো জানান, কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বাড়ি হওয়ায় মনিরুল বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরই এক পর্যায়ে প্রতারণার শিকার সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার শাহিন আলম এবং ঠাকুরগাঁও জেলার নাসিমের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের একটি অপারেশনাল দল গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মনিরুল ইসলামের নন্দিকুজার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে।এসময় ভুয়া নিয়োগপত্র, দুটি পেইনড্রাইভ (যার মধ্যে বিভিন্ন ভুয়া নিয়োগপত্রের সফট্পি রক্ষিত), বিভিন্ন ব্যাংকের ১৬টি চেকবই, বিভিন্ন ব্যাংকের ৭টি এটিএম কার্ড, ৩টি ভুয়া এনআইডি কার্ড (যার ভিতরে একটি ভুয়া),চাকুরী দানের ৩টি চুক্তিনামা ষ্ট্যাম্প, ১২টি জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প, ৮টি অর্থ লেনদেনের রেজিষ্টার, ২টি ভুয়া নিয়োগপত্র, ১টি ভুয়া আইডি কার্ডের ফটোকপি, করণিক প্রতারণালব্দ নগদ-৫৮ হাজার ১শ ৪০ টাকা, ৮০০ ভারতীয় রুপি জব্দ করা হয়।
অভিযুক্ত মোঃ মনিরুল ইসলাম এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তিনি পেশায় একজন ঔষধ বিক্রেতা হলেও নিজেকে সেনাবাহিনীর সিএমএইচ, ঢাকায় করণিক পদে কর্মরত আছেন বলে পরিচয় দিতেন এবং ওই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ যেমন সৈনিক, অফিস সহায়ক, মেসওয়েটার, স্টোরম্যান পদে চাকুরী দেওয়া প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে ৩য় পক্ষের মাধ্যমে চাকুরী প্রত্যাশী যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতেন। এক্ষেত্রে প্রতারক মনিরুল রাজু জাল জালীয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকুরী প্রার্থীদের সরলতার সুযোগ নিতেন। চাকুরী প্রার্থীগণ নিয়োগপত্রে উল্লেখিত যোগদানের তারিখে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগদানের নিমিত্তে যাওয়ার পর বুঝতে পারতেন যে উক্ত নিয়োগপত্র সঠিক নয় বা ভুয়া। এভাবে প্রতারক মনিরুল রাজু ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকুরী প্রত্যাশীগণের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও মনিরুল প্রতারণার কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজ নাম পরিবর্তন করে চাঁন মন্ডল পরিচয় ধারন করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে প্রতারক মনিরুল অভিযোগকারী শাহিন আলম (২৭) ও মোঃ নাসিম (২১) এর নিকট ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান ও মোটা অংকের অর্থ গ্রহনসহ জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন চাকুরী প্রত্যাশীর নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে এবং জানায় ইতোঃপূর্বে ডিএমপি এর ভাষানটেক থানার এফআইআরনং-২৪/১৭১, তারিখ- ২৭ আগস্ট, ২০১৭, ধারা-১৭০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০/৪০৬/৫০৬ পেনালকোড-১৮৬০ এবং ২। ডিএমপি এর শেরেবাংলা নগর থানার এফআইআরনং-১৮/২২০, তারিখ ২০জুলাই, ২০১৭, ধারা- ৩৬৫/৩৮৫/৩৮৬/৩৪দে নালকোড-১৮৬০, থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মনিরুলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।