নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোরের রেলওয়ে প্লাটফর্ম থেকে ৮টি হত্যা মামলার আসামী সিরিয়াল কিলার বাবু শেখসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম বার।
প্রেস ব্রিফিং-এ জানানো হয় গত ৯ অক্টোবর নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয়ন্তীপুর এলাকার রেহেনা বেগম (৬০) ও লালপুর উপজেলায় চংধুপইল এলাকার আনসার সদস্য সাবিনা পারভীন সাহেরাকে হত্যা করা হয়। এ দুটি ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে গত ১৫ অক্টোবর পুলিশ সিংড়া থেকে রুবেল আলীকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে একই দিন লালপুর উপজেলায় চংধুপইল থেকে চুরি করা স্বর্নালংকার ক্রেতা নাটোর শহরের স্বর্ন ব্যবসায়ী লিটন খাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ অক্টোবর নাটোর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসাদুলকে গ্রেফতার করা হয়।
আসাদুল জানায় চুরি করার সময় তার সাথে রুবেল আলী ও বাবু শেখ ছিল। এর পরে ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় একই স্থান থেকে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার ওরফে বাবু শেখ ওরফে কালুকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে বাবু শেখ স্বীকার করে যে সে নাটোরের লালপুর, বাগাতিপাড়া, বাঁশিলা, নলডাঙ্গা, সিংড়া ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল গ্রামের রুপ বানু হত্যা ও সখিপুর থানার তক্তারচাল এলাকার সমলা হত্যা এবং নওগাঁ জেলা সদরেসহ ৮ টি হত্যকান্ড সংঘটিত করেছে। তবে সে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলাদের হত্যা করে আসছিল। তারা মৎস্য শিকারীর (জেলে) বেশে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় ও চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক সহযোগিদের সাহায্যে সুবিধাজনক বাড়িতে প্রবেশ করে ধর্ষণ শেষে হত্যা ও চুরি করে।
সিরিয়াল কিলার বাবু শেখ নওগাঁ জেলার রাণীনগর থানার মৃত জাহের আলীর ছেলে। অত্যধিক চুরি করায় অতিষ্ঠ হয়ে তাকে এলাকাবাসী গ্রাম ছাড়া করেছিল। সে মাছ ধরার চেয়ে হত্যাকে অনেক সহজ মনে করে।
ডিআইজি জানান, এ ধরণের একজন হত্যাকারী বাহিরে থাকলে আরো অনেক হত্যাকান্ড ঘটাতে পারতো। তাকে গ্রেফতার করে ৮ টি মামলার জট খোলায় তিনি নাটোরের পৃলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রেস ব্রিফিং শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংকালে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়াইগ্রাম সার্কেল হারুন-অর রশিদ, ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান উপস্থিত ছিলেন।