নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ায় নবীন আলী নামে ১২ বছরের এক শিশুকে মারপিটের ঘটনায় রাসেল সরদার রুবেল (৩৫) নামে মাস্টাররোলে কর্মরত এক কর্মচারীকে বহিস্কার করেছে উপজেলা প্রশাসন। ঘটনাটি জানার পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মীম তাবাসসুম প্রভা শুক্রবার রাসেলকে বহিস্কার করেন।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করেন তিনি। শিশু নির্যাতনের শিকার নবীন উপজেলার নিগইন এলাকার আব্দুস সালাম ও আশেদা বেগম দম্পতির ছেলে। সে নিংগইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। অপরদিকে অভিযুক্ত রাসেল একই এলাকার বেলাল সরদারের ছেলে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মীম তাবাসসুম প্রভা।
ভুক্তভোগী নবীন আলীর মা আশেদা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নবীন দোকান থেকে হাতে টর্চ লাইট নিয়ে বাড়ী ফিরছিল। এসময় মাথায় করে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় পথ চলতে সুবিধার্থে শ্রমিকরা নবীনকে টর্চের আলো জ্বালাতে বলে। এসময় নবীন টর্চের আলো জ্বালালে তা সমানে থাকা রাসেলের চোখে পড়ে। এতে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়। পরে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাসেল শিশু নবীনকে কিল, ঘুষ, চড়, লাথি মেরে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে আশেদা বেগম ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাসায় নিয়ে যান। এই ঘটনায় আশেদা বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দেন। এবিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে রাসেল তাদেরকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয় বলে দাবি করে আশেদা বেগম। এই ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত রাসেল সরদার মুঠোফোনে (০১৮৭০৬৮৫০১২) যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মীম তাবাসসুম প্রভা শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানান, ঘটনাটি জানার পর অভিযুক্ত রাসেলকে বহিস্কার করা হয়েছে। এসংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সাথে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালামকে রাসেলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইউএনও সিংড়ার নিজস্ব ওয়ালে এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে। তিনি জানান, রাসেলকে করোনাকালীন সময়ে অতিরিক্ত মাস্টার রোলে অনেকটা মজুরি ভিত্তিক শর্তে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নয়।উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত অন্যান্য কর্মচারী যাতে কোন অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, এই ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের অধীনে বিচারাধীন।