নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী শরিফুল ইসলাম রমজানের এক সমর্থককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগে পরাজিত প্রার্থী জামিল হোসেন মিলন ও তার গাড়ির ড্রাইভার বাশারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে শহরতলীর তালতলা হাফরাস্তা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে শুক্রবার দুপুরে তারা আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান। এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের টানা তৃতীয় বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানের কাপ পিরিচ মার্কায় ভোট করেন শহরতলীর তালতলা হাফরাস্তা এলাকার রুবেল ইসলাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হোসেন মিলন ও তার সমর্থকরা রুবেলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় তালতলা এলাকায় মিলনের চেম্বারে।
সেখানে রুবেলকে মারপিট করে মিলন ও তার সমর্থকরা। তাদের মারপিটে রুবেলের হাত, পা ও মাথায় গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনের চেম্বার থেকে রুবেলকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ প্রথমে মিলনের গাড়ী চালক বাশারকে আটক করে। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে মিলনের বাড়ী থেকে মিলনকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায়। এরপর এলাকায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা শুরু হলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় ভুক্তভোগী রুবেলের বাবা আলম গাজী বাদী হয়ে মিলনকে প্রধান আসামিসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ মিলন ও তার গাড়ী চালক আবুল বাসারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সানু আকন্দ এর আদালতে জামিন আবেদন করে মিলনের আইনজীবি। বিচারক মামলা পড়ে মিলন ও বাশারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে বিজয়ী প্রার্থী শরিফুল ইসলাম রমজান জানান, একজন প্রার্থী কর্তৃক নির্বাচন পরবর্তী এ রকম সহিংসতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তার সমর্থক রুবেলকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক বিচারের দাবী জানান তিনি। জামিন পাওয়ার পর জামিল হোসেন মিলন বলেন, তার এলাকায় এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। আর অন্য কোথাও ঘটে থাকলেও তা তার জানা নাই। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসার পর তিনি জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পরে তাকে আদালতে চালান করলে তিনি আইনজীবির মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন আদালতে। আদালতের বিচারক তাকে জামিন দিয়েছে। তিনি ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এখন ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবী করেন তিনি।