আতিকা রহমান বর্তমান প্রজন্মের একজন সম্ভাবনময় তরুণ সাংবাদিক। পরিশ্রম ও নিষ্ঠা সততা দিয়ে তরুণ বয়সেই সাংবাদিকতায় বেশ পরিচিত পেয়েছেন। দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি আরটিভির সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছে। কাজের স্বিকৃতিসস্বরুপ উল্লেখযোগ্য রিপোর্ট করার জন্য বেশ কিছু পুরস্কারও অর্জন করেছেন। চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন।
মিডিয়ায় যে কজন এ প্রজন্মের নারী সাংবাদিক সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন, তার মধ্যে আতিকা রহমান অন্যতম।
আতিকা রহমান ৩ বার ইউনিসেফ বাংলাদেশের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ওগুলো সবগুলোই শিশু অধিকার ও শিশু ও কিশোরদের নানা সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে রিপোর্ট করার জন্য। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পুরস্কার পেয়েছিলাম সেটি ছিলো অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান ডেলিভারী, মাতৃত্বকালীন ঝুঁকি ও স্বাস্থ্য নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছিলো। এছাড়া বন্ধু সোসাল ওয়েলফেয়ার থেকে হিজরাদের নিয়ে রিপোর্ট করেও ফেলোশিপ ও অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
আতিকা রহমান মূলত দুর্নীতি বিরোধী ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংশ্লিষ্ঠ, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে রিপোর্ট করেন। এর পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নিউজ করেন। ঘটনা দুর্ঘটনা সমসাময়িক অনেক বিষয়ে রিপোর্ট করেন।
আতিকা রহমান সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশান সংগঠনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক। এবং নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি- আরএফইডির একজন সক্রিয় সদস্য। এছাড়া ঢাকাস্থ নাটোর জেলা সাংবাদিক সমিতির প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাংবাদিকতার শুরু কিভাবে, এ প্রসঙ্গে আতিকা জানান,
ছোটবেলা থেকে গল্প কবিতা লেখার অভ্যাস ছিলো। ২০০৭ সালে তখন আমি অনার্স ১ম বর্ষে পড়ি। পাক্ষিক অন্যন্যাতে ফিচার লেখা শুরু করি। এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রথম আলোর ফিচার বিভাগে কাজ করতাম। এরপর ২০১০ সালে ৭ মাসের মতো দৈনিক ভোরের কাগজে রিপোর্টার হিসেবে চাকরি করি।
এরপর ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে আরটিভিতে যোগদান করি। আমার টেলিভিশন সাংবাদিকতার কাজ শেখা এবং আজ এ পর্যন্ত আসার পেছনে আরটিভির অবদান অনেক। আরটিভি আমাকে অনেক ভালো কাজ করার সুযোগ দিয়েছে।
পেশাগত জীবনে এখন কি ধরনের সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
বতর্মানে পেশাগত জীবনে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তথ্য না পাওয়া , কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের হুমকি বা কাজে বাধাসহ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। এছাড়া এখন সাংবাদিকদের মধ্যে এবং গণমাধ্যমের প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও অনেক প্রতিযোগীতা তৈরী হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে এই তথ্য প্রযুক্তি অবাধ প্রবাহের যুগে অনেক নিউজ সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে চলে আসে। ডিজিটাল মাধ্যমের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়ানোটাও এখন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এটাকে আমাদের সবার মোকাবেলা করতে হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্তেও কেন এই পেশা বেছে নিলেন এ প্রশ্নের জবাবে আতিকা রহমান বলেন, আমি মনে করি সাংবাদিকতা অত্যন্ত সৃজনশীল একটি পেশা। এখানে ক্রিয়েটিভ কাজ করার সুযোগ আছে। এই পেশার মাধ্যমে আমার লেখনির মাধ্যমে দেশের মানুষের কথা বলতে পারবো। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারবো। এই কাজের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনে ভূমিকা রাখতে পারবো।
নারী সাংবাদিক হিসেবে কতটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়?
সাংবাদিকতার পেশাটাই অনেক চ্যালেঞ্জিং। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে কাজ করতে হয়। নারী হিসেবেও অনেক চ্যালেঞ্জ এর মুখোমুখি হতে হয়। কেননা আমাদের সমাজ রাষ্ট্র এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী নারীবান্ধব, নারীদের জন্য সুন্দর কর্মপরিবেশ বা শতভাগ নারীদের জন্য নিরাপদ হয়ে ওঠেনি। তবে আমি পেশাগত জায়গায় সব সময় চেষ্টা করেছি নারী হিসেবে নয়,, একজন সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে সাহসী ও দক্ষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে।
আমি সব সময় মনে করি কেউ আমাকে জায়গাটা করে দিবেনা। নিজের পরিশ্রম দক্ষতা দিয়ে জায়গা টা তৈরি করে নিতে হবে।।
আতিকা ভবিষ্যতে সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে আরও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এছাড়া আমি নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করতে চান। এবং পিছিয়ে পরা জনগোষ্টি অটিজম প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
আতিকা রহমানের জন্মস্থান নাটোর। আতিকা রহমানের বাবা একজন সরকারি চাকুরজীবী। তার বাবা মা নাটোরেই বসবাস করেন। আতিকা রহমানের স্বামী পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তাদের দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
২০১০ সাল থেকে আরটিভিতে কর্মরত আছেন। আতিকা রহমানের বেড়ে ওঠা ও এইসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া নাটোরেই। ছোটবেলা থেকেই নাটোর সাহিত্য সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।