নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বড়াইগ্রামে ২৮ জুন ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় ৯ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ২ জুলাই রোববার বেলা এগারোটার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান।
তিনি জানান, ২৭ জুন নাটোরের বড়াইগ্রামে সংঘটিত একটি ডাকাতি ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় ২৯ জুন বড়াইগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করে ডাকাতির শিকার নুর আলম। সেই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ ক্লুলেস খুনসহ ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন করতে অভিযান পরিচালনা করে। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক এর নেতৃত্বে অভিযানে পুলিশ ডাকাতির সাথে জড়িত সন্দেহে লালপুর উপজেলার কদিমচিলান গ্রামের মৃত মহরমের ছেলে ইনদাদুল (২৭) ,মানিকপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার আবু হানিফের ছেলে মোঃ আরিফ (২৫), একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ মিঠুন (২৮), মানিকপুর পশ্চিমপাড়ার মোঃ ময়েজ এর ছেলে মোঃ শাহ আলম (২৪), মৃত আঃ কুদ্দুস এর ছেলে মোঃ রুবেল (৩২), গোপালপুর মধ্যপাড়ার লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ সোহাগ (২৫), লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ সুজান (৩০), বড়াইগ্রাম উপজেলার নায়িরপাড়া গ্রামের মোঃ সেকেন্দারের ছেলে মোঃ রেজাউল (৩৫), গুরুদাসপুর উপজেলার চকলিঘরী (গুচ্ছগ্রাম) এলাকার আঃ রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রসুল (৩২)কে গ্রেফতার করেন। এসময় ডাকাতদলের সদস্যদের নিকট হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি ট্রাক জব্দ, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ডাকাতদলের সদস্যদের নিকট হতে উদ্ধারকৃত ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা ও ভিকটিমদের কাছ থেকে একটি লুণ্ঠিত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, মামলার বাদি বগুড়া জেরার সারিয়াকান্দি উপজেলার আব্দুস সালামের ছেলে মোঃ নূর আলম (২৬), হত্যাকান্ডের শিকার শহিদুল ইসলাম মিয়া এবং রেজাউল করিম, ইউনুছ আলী মিলে পবিত্র পদ-উল- আযহা উপলক্ষে ১৫টি গরু নিয়ে নিম্ন বলাইল গ্রাম হতে ভাড়াকৃত ট্রাকে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকার মেরুন বাড্ডা, আফতাব নগরের কোরবানীর পশুর হাটে যায়। গরুগুলো বিক্রয় করে ১৪ লক্ষ ১ হাজার ৫ শত টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে গত ২৭ জুন এগারোটার দিকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এমতাবস্থায় তারা একটি ট্রাকে উঠে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর আগে থেকেই ট্রাকে থাকা নয় ব্যক্তি অস্ত্রের মুখে ব্যবসায়ীদের হাত মুখ বেঁধে নির্যাতন করে তাদের কাছ থেকে ১৪ লক্ষ ১ হাজার ৫ শত টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর নাটোরের কিন্তু হত্যাকান্ডের শিকার শহিদুল ইসলাম ঐ সময় ডাকাতদের তার নিকটে থাকা গরু বিক্রয়ের টাকা দিতে না চাইলে ডাকাতগণ শহিদুল ইসলামকে মারপিট করে তার বাম পাজরে মুখে ও ঘাড়ে জখম করে এবং গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ডাকাতদল শহিদুল ইসলাম এর মৃতদেহ সুবিধা জনক স্থানে ফেলতে না পেরে ডিকটিমগণ এবং ভিকটিম শহিদুলের মৃতদেহ নিয়ে সারারাত ও সারাদিন ট্রাকে করে ঘুরতে থাকে। গত ২৮ জুন রাত ৯টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের মান্নান নগর হতে চাটমোহর গামী রাস্তায় হান্ডিয়াল নামক স্থানে হিজল গাছের নিচে চলন্ত ট্রাক থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় আঃ সালামকে ফেলে দেয়। পরে ডাকাতদল রাত সাড়ে ৯টার দিকে বড়াইগ্রামের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে আগ্রান ফিলিং স্টেশন এর পশ্চিমে রাস্তার উত্তরপার্শ্বের ঢালে হাত পা বাঁধা অবস্থায় শহিদুলের মরদেহ এবং নূর আলম, রেজাউল করিম, মোঃ ইউনুছ আলীদের ফেলে দিয়ে ট্রাক নিয়ে ডাকাতদল চলে যায়।