নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগাতিপাড়া
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় জমির স্বত্ব না থাকলেও একের পর এক মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দিনের পর দিন আদালত চত্বরে অযথা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে অতিষ্ট নহচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের আসায় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা।
তথ্য মতে বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের ডুমরাই ঢাকাপাড়া গ্রামের খাঁ পরিবারের পারিবারিক জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে চলছে দন্দ।
এ ব্যাপারে নাটোর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরপর তিনবার জনৈক মোহাম্মদ আলী ভুক্তভোগীরা খাঁ ও তার ছেলে আমজাদ আলী খাঁ এবং ভাতিজা আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মোহাম্মদ আলী খাঁ’র চাচাতো ভাই সুরুজ আলী খাঁ। তিনি এর আগে একই আদালতে মামলা দায়ের করে তিনবার খারিজ হওয়ার পরেও আবারো বর্তমানে নতুন করে মামলা দায়ের করে আদালত থেকে বিবাদমান জমিতে ১৪৪ধারা জারির আদেশ নিয়েছেন। এতে নিজ বাড়িতে চলাচল ও বসবাসে সমস্যায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট বিবাদী পরিবার।
আর এই মামলায় স্থানীয় ৭নং ওয়াড মেম্বর আক্কাস আলী খাঁ বাদির আপন ছোট ভাই হওয়ায় তিনি প্রভাব খাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪সালের ১৫ফেব্রæয়ারী ১২৭৫নম্বর দলিল মূলে ঢাকাপাড়া গ্রামের ছিটু খাঁ তার পৈত্তিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি থেকে পাঁচ ছেলেকে এক একর নিরানব্বই শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন। ওই দলিল মূলে পরবর্তিতে বাটোয়ারা দলিল হিসেবে নির্ধারিত সীমানায় মোহাম্মদ আলী খাঁ আটষট্টি শতক জমি পান। এর মধ্যে ২২৭ ও ২২৮দাগে সম অংশে ১৭শতক জমি পান মোহাম্মদ আলী। একইভাবে ছিটু খাঁ’র অপর ভাই আব্দুল আলী খাঁ পৈত্তিক সূত্রে একই দাগে সমপরিমান জমি পেয়ে তার বড় সন্তান আনোয়ারের ছেলে (নাতি) হিমেলকে দশ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দিলেও ওই অংশের সমূদয় (১৭শতক) সম্পত্তির উপর সে দোতলা বাড়ি নির্মান করে বসবাস করতে থাকে। এতে আনোয়ারের ছোট ভাই সুরুজ আলী পিতার অংশের জমি না পেয়ে এবং ভাতিজা হিমেলের সাথে সম্পর্ক নষ্ট না করতে কৌশলে জমির দাবিতে পাশের অধিবাসী মোহাম্মদ আলী, আমজাদ আলী খাঁ এবং আব্দুল করিম আলী খাঁ’র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত পরপর তিনবার মামলা খারিজ করে দেওয়ার পরেও আবারো মামলা দায়ের করেন সুরুজ আলী খাঁ।
বিবাদী আমজাদ আলী খাঁ দাবি করেন, জমির স্বত্ব না থাকলেও শুধুমাত্র হয়রানি করতেই তাদের বিরুদ্ধে বারবার মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সুরুজ আলীর ছোট ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর আক্কাস আলী খাঁ প্রভাব বিস্তার করে হয়রানিতে দীর্ঘ সূত্রিতা সৃষ্টি করছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে বাদি সুরুজ আলী জানান, তিনি ওই অংশে জমি পাবেন বিধায় মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় ইউপি মেম্বর ও বাদির ভাই অভিযুক্ত আক্কাস আলী খাঁ জানান, দাদার আমল থেকে শুধুমাত্র দখলদারীর ভিত্তিতে তার বাপ-চাচারা জমি ভোগ দখল করলেও দলিল অনুযায়ী অংশ চাওয়ায় এখন মামলার মতো ঘটনা ঘটেছে । তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেষ্টা করছেন তিনি।
দয়ারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুব হোসেন মিঠু জানান, উভয় পক্ষ একমত না হওয়ায় বিবাদমান ঘটনার নিস্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। উভয় পক্ষ আন্তরিক হলে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মিমাংসা করা সম্ভব।
ভুক্তভোগীদের দাবি, জমি স্বত্ব না থাকলেও মেম্বরের ক্ষমতার বলে তাদেরকে আদালতের আদেশের কারণে নিজ জমি ও বসতবাড়িতে জাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে নিজের বাড়িতেই তাদের প্রবেশাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে যা মানবাধিকার লঙ্ঘন।
অনতিবিলম্বে সমস্ত দলিল, খতিয়ান ও রেকর্ড দেখে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টির সঠিক সুরাহা করতে সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগরা।
আরও দেখুন
পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …