নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(কৃষি) মাহমুদুল ফারুকের বিরুদ্ধে ডিলারদের কাছে ঘুষ চাওয়ায় অভিযোগ উঠেছে। ফলে, সারের বাজারে সংকট তৈরির শঙ্কা করছেন ডিলাররা। তাদের অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের অজুহাত দিয়ে উৎকোচ দাবি করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে জেলার সার ডিলার ওই কর্মকর্তাকে অপসারণ এবংশাস্তির দাবি করেছে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন(বিএফএ) নাটোর জেলা শাখা । তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা। এদিকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ।
দেশের শস্য ভান্ডারখ্যাত নাটোরে রয়েছে ফসলের বৈচির্ত্য। শুধু ধান, গম, সরিষা, মটরশুটি, মুগডাল ও রসুন উৎপাদনে দেশের বড় অংশের যোগান আসে এ জেলা থেকেই। শুধু তাই নয় বিভিন্ন প্রকার ফল আর সবজি উৎপাদনেও দেশের শীর্ষ উৎপাদনশীল জেলা নাটোর। যে কারণে সেখানে রাসায়নিক সারের চাহিদা বেশি। জেলায় চলতি বছর ৫৮,৫৯৩ টন ইউরিয়া, ১৬,০৬৩ টন টিএসপি, ৩৫,৭৮৩ টন ডিএপি, ১৬,৫৮৪ টন এমএপি, ১১৬৩৯ টন জিপসাম বরাদ্দ অনুমোদন করেছে সরকার। বিপরীতে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশনের বিসিআইসির ডিলার রয়েছে ৬৫ জন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের বিএডিসির ডিলার রয়েছে ৬৭জন।
ডিলাররা অভিযোগ করেছেন, কিছুদিন আগে কৃষি বিভাগ থেকে নানা শর্ত উলেখ করা একটি চিঠি পেয়েছেন তারা। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সবার কাছে আলাদা ভাবে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে প্রকাশ্যে হয়রানি করার ঘোষণাও দেন।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার সমিতির নাটোর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুস সালাম জানান, তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে কৃষি উপ-পরিচালকের ঘুস চাওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন।
নাটোর জেলা ফার্টিলাইজার সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ গত ১৩ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেয়া হয় । লিখিত অভিযোগে বলা হয় , নাটোরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(কৃষি) মাহমুদুল ফারুক সিংড়া উপজেলার সার ডিলার এ এফ এম মাহফুজুর রহমানের কাছে ঘুস দাবী করেন ।
মাহফুজুর রহমান বলেন,গত ১৩ জানুয়ারী তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সার ,বীজ তদারক কমিটির সভায় য়োগদান করেন । সভাশেষে তার সাথে দেখা করে যেতে বলেন উপ-পরিচালক(কৃষি) মাহমুদুল ফারুক। তিনিসহ গুরুদাসপুর উপজেলার সার ডিলার আব্দুল মজিদ ও বাগাতীপাড়ার ডিলার সুভাশীষ গারোদিয়া উপ-পরিচালক(কৃষি) অফিস কক্ষে যান ।
এ সময় উপপরিচালক তাদের কাছে সার বিক্রির পার্সেন্টেজ দাবী করেন। বিষয়টি গোপন রাখার জন্য সর্তক করে দেন । এসময় তারা বিএফএ সভায় আলোচনার কথা বলে বিদায় নেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উপপরিচালক নানা অজুহাতে জেলার সার ডিলারদের হুয়রানি করা শুরু করেন । ফলে কৃষকদের কাছে সময়মতো তারা সার পৌচ্ছাতে পারছে না ।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন অভিযুক্ত ডিডি মাহমুদুল ফারুক। তিনি জানান, মন্ত্রণালয় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশেই ডিলারদের চিঠি দেয়া হয়েছে। ঘুষ দাবীর অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া ।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ অভিযোগের বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয়ের নজরে এনে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ।
উলেখ্য, ২০১১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা থাকার সময়েও কৃষি কার্ড দেয়ার বিনিময়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল অভিযুক্ত মাহমুদুল ফারুকের বিরুদ্ধে।