রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / আইন-আদালত / নাটোরে কারারক্ষীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ

নাটোরে কারারক্ষীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ

কাউছার হাবিব:যৌতুক দিতে না পারায় এক দরিদ্র এতিম মেয়ে গৃহবধু বর্ণাকে বাড়ি থেকে নির্যাতন করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে নাটোর জেল খানার কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে।অভিযোগকারী দরিদ্র বর্ণা এখন মায়ের কাছেই অবস্থান করছে।এ ঘটনায় নাটোর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।অপরদিকে কারারক্ষী গোলাম রাব্বানী অফিসকে না জানিয়ে নিরুদ্দেশ রয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে কারাকর্তৃপক্ষ নাটোর থানায়েএ ব্যাপারে একটি অভিযোগ করেছেন।

মামলা ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়,চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী নাটোর সদরের হালসা ইউনিয়নের মাহেষা গ্রামের মৃত আবুবক্করের মেয়ে বর্না বেগম (২৩)সাথে নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীর (৩৫)সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর রাব্বানীর স্ত্রী বর্নাকে নাটোর সদর থানাধীন হরিশপুর বাগান বাড়ীর (পুলিশ লাইনের পূর্বপার্শ্বে)মৃত দুলাল চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া নিয়ে নির্জন বন্দি জীবন যাপন করতে বাধ্য করে।

বর্না অভিযোগ করেন,কারারক্ষী রাব্বানী বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা পয়সা যৌতুক দাবী করেন।নাটোর জেলা কারাগারে কারারক্ষী পদে চাকুরি করায় সেই ক্ষমতায়,প্রতিটি মুহুর্তে আমাকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন এবং অন্যায় অত্যাচার করে।বিবাহের পর থেকে আমি অতি কষ্টে জীবন যাপন করতে থাকি ।মোটরসাইকেল কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা না দিলে আমার মায়ের বাড়ীতে যেতে নিষেধ করে এং হুমকি দেয় রাব্বানী। বাড়ীর বাহিরে বের হলে আমাকে সারা জীবনের জন্য মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে অথবা মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় রাব্বানী । এমতাব্স্থায় গত ৫ জুলাই যৌতুক বাবদ নগদ দুই লক্ষ টাকা দাবী করে।দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুসি দিয়ে ও বাঁশের লাঠি,ছাতা দিয়ে তিন দফা আমকে নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায় আমার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।

বর্নার মা মনোয়ারা জানান,মেয়ে আমার এতিম অসহায় টাকার জন্য মেয়েকে এইচ এস সি পরীক্ষা দেওয়াতে পারিনি। কষ্টে অর্জিত টাকা পয়সা যৌতুক দিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু রাব্বানীর কাছে আমার মেয়েকে বন্দি জীবন যাপন করতে হয়েছে। ভবিষ্যতে সুখের আশায় কারারক্ষী রাব্বানীর নির্যাতন সহ্য করে আমার মেয়ে সংসার করেছে।গরু,ছাগল বিক্রি করে বিভিন্ন সময় রাব্বানীকে আমি মোটা অংকের টাকা পয়সা দিয়েছি। মোটরসাইকেল কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা না দিতে পারায় আজ আমার মেয়েকে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে।

বর্নার মামা জানান,ঘটনার পরে নাটোর জেলা কারাগারের জেল সুপার আব্দুল বারেকের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়ে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু রাব্বানী বিভিন্নভাবে তালবাহানা করে,আপোষ মিমাংসা করে নাই। পরে থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ জানালে নাটোর সদর থানা কর্তৃপক্ষ ও জেল সুপার রাব্বানীর সাথে কথা বলে আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা করে। এক পর্যায় নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী রাব্বানী ৩ দিন সময় নিয়ে ঘর সংসার করার কথা জানায়,হঠাৎ সংসার করার নামে তালবাহানা করে পালিয়ে যায়।বর্তমানে জেল কারারক্ষী গোলাম রাব্বানী এখন পলাতক।এ ঘটনায় রাব্বানীর স্ত্রী বর্না বাদী হয়ে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করার অভিযোগে নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীকে আসামী করে নাটোর সদর থানায় ১১ (গ)২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংসোধনী ২০০৩,যৌতুকের জন্য মারপিট একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এখন তাকে খুঁজছে।

নাটোর জেলখানার জেল সুপার আব্দুল বারেক জানান, রাব্বানী তিন মাস ধরে নিখোঁজ।এব্যাপারে আমরা নাটোর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দাখিল করেছি। চাকরিতে যোগদান করার নোটিশ তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।কিন্তু এখনো সে যোগাযোগ করেনি বা চাকরিস্থলে যোগদান করেনি।তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তার স্ত্রী বর্নার অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

নির্যাতিতা এতিম মেয়ে বর্না সুবিচার পাক এমনটাই আশা করেন এলাকাবাসী।

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে অবৈধভাবে পুকুর খনন করার অপরাধে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক নন্দীগ্রাম,,,,,,,,,,,,, বগুড়ার নন্দীগ্রামে অবৈধভাবে পুকুর খনন করার অপরাধে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *