নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা কমে গেছে।সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে গত এক সপ্তাহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪১ জনের।৪ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯২৪৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।গত এক সপ্তাহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪১ জনের। এক সপ্তাহে নতুন সনাক্ত ১১ জন রোগী।তার মধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১০১০ জন। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮৭৫ জন।এক সপ্তাহে সুস্থ হয়েছেন ২২ জন। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ১২ জন।আজ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন ২ জন এবং হোম আইসোলেশন এ আছেন ১২১ জন। এখনো সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা হয়নি ৫১৭ জনের। ১৭৪ জন এর নমুনা নষ্ট হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে শহরের এক বাসিন্দা জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী যেমন বাড়ির বাইরে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন,তেমনি তার বাড়ির সদস্যরাও কোনো নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করছেন না। এব্যাপারে কর্তৃপক্ষও উদাসীন মনে হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নমুনা সংগ্রহ কমে যাওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে জনমনে আবারো উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামনের শীত মৌসুমে দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে।তার জন্য এখন থেকেই সর্তকতা অবলম্বন না করলে হয়তো এর মাশুল গুনতে হতে পারে।বাজার ঘাট অফিস-আদালতে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কেউ কেউ বলছেন ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।তারা কোন মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর সকল প্রতিষ্ঠান পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। উপজেলা পর্যায়ে শতভাগ জনগণ মাস্ক ব্যবহার করেন না। বরং তারা মাস্ক পরিহিত কোন ব্যক্তিকে দেখলে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেন।
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রনেন রায় হতাশা ব্যক্ত করে বলেন,এই ভাবে লোকজনের স্বাভাবিক চলাফেরা আবারো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। হয়তো যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি আছে তারা বেঁচে যেতে পারেন। কিন্তু যারা বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা ভীষণ ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারেন।তিনি আরো বলেন,আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে আগেই প্রশাসন আবারো যদি কিছুটা কঠোরতা নিয়ে আসেন তাহলে,হয়তো করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
সামনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে একটা বড় ভীড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২৬ দফা গাইডলাইন অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে সকল মন্দির কর্তৃপক্ষ কে। কিন্তু কতটুকু মানতে পারবে সে নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
সিভিল সার্জন ডাক্তার কাজী মিজানুর রহমান জানান,মানুষের এই উদাসীনতা দেখে সামনের শীতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যেতে পারে বলে আমাদের মনে হয়েছে।আগামী ১৩ অক্টোবর করোনা প্রতিরোধ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং আমরা সমস্ত বিষয়ে পর্যালোচনা করে আবারো সিদ্ধান্ত নেব মাঠ পর্যায়ে সচেতন করার জন্য।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়ার জানান আগামী ১৩ অক্টোবর করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।এই সভায় বিষয়টি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে কী কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে।ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দিলেও আমরা নাটোরে কোন পর্যটনকেন্দ্র এখনো পর্যন্ত খুলে দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।
যেহেতু মাস্ক ব্যবহার সবচেয়ে বেশি করোনা প্রতিরোধ করতে পারে সেই জন্য প্রশাসনের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে যে প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোরতা অবলম্বন করলেই কেবল মাত্র কিছুটা প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব হবে।