বিশেষ প্রতিবেদকঃ
নাটোর সরকারি সহায়তার হটলাইন নম্বর ৩৩৩ এ ফোন করে ত্রাণ চাওয়ায় নাটোরের লালপুরে এক কৃষককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, লালপুরের ৯ নং অর্জুনপুর-বরমহাটি(এবি) ইউনিয়নের আঙ্গারিপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলামসহ গ্রামের প্রায় ৩০০জন করোনাভাইরাসের এ সময়ে বেকার হয়ে পড়ে। একদিন গণমাধ্যমে কৃষক শহিদুল জানতে পারেন ৩৩৩ নাম্বারে ফোন করলে খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায়। এরপর গত ১০ এপ্রিল ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে তিনিসহ গ্রামের সবার জন্য খাদ্য সহায়তা চান তিনি। সেখান থেকে খাদ্য সহায়তার আশ্বাস মেলে। ৩৩৩ এর মাধ্যমে অবগত হয়ে ইউএনও চেয়ারম্যানকে ঐ এলাকায় ত্রাণ সহায়তার নির্দেশ দেন। এর দুইদিন পর গত ১২ এপ্রিল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার তাকে চৌকিদার দিয়ে ডেকে এনে নিজেই মারধর করেন। ৩৩৩ নম্বরে ফোন করায় এলাকার সম্মান গেছে বলে ঐ কৃষককে ধমক দিয়ে বিষয়টি কাউকে না বলার হুঁশিয়ারি দেন। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ত্রাণ চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটু উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। কৃষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেছেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৃষককে মারধরের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়ায় চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ(শোকজ) দেওয়া হয়েছে। ঘটনার জন্য চেয়াম্যানকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। চেয়ারম্যান বিষয়টি নিস্পতির কথা বললে তা তিনি মিথ্যা বলেছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষক জানান, টিভি স্ক্রিনে বিজ্ঞাপনে সরকারি সহায়তার হটলাইন নাম্বার ৩৩৩ দেখে আমিসহ এলাকাবাসীর ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি, এরপরে চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজনের হুমকির মুখে আছি। এই মুহুর্তে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।