নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের লালপুরে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষনের দায়ে সুমন আলী নামে এক যুবককে মৃত্যুদন্ড ও রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ সময় দন্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ ভিকটিম প্রাপ্ত হইবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। আজ বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহীম এই আদেশ দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, স্কুলে যাওয়া আসার পথে বিভিন্ন ভাবে প্রেম নিবেদন, কু-প্রস্তাব সহ উত্যক্ত করতো স্থানীয় এক বখাটে যুবক সুমন আলী। বিষয়টি স্কুল ছাত্রী বাড়ীতে জানানোর পর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সুমন। ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন তার সহযোগীদের নিয়ে ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়ীতে হামলা করে তার মাকে একটি ঘরে আটকে রেখে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে চলে যায়। এ সময় তার বাড়ীর টিনের বাক্স ভেঙ্গে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করেও নিয়ে যায় তারা। পরে স্কুল ছাত্রীর মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তার মায়ের ঘরের দরজা খুলে দেয় এবং স্কুল ছাত্রীর বাবাকে সংবাদ দেয়। পরে স্কুল ছাত্রীর বাবা ও স্থানীয়রা অভিযুক্ত সুমনের বাড়ীতে গিয়ে মেয়েকে ফেরৎ চাইলে বিভিন্ন টালবাহনা করেন। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারী মেয়েকে ফেরৎ সহ টাকা ও গহনা ফেরৎ দিবে বলে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা হয়। কিন্তু ১৭ তারিখে মেয়েকে ফেরৎ না দিয়ে উল্টো তাদের তাড়িয়ে দেয় সুমনের পরিবারের সদস্যরা। পরে এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সুমন আলীর নামসহ ৬ জনের নামে ও অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে অভিযুক্ত করে লালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার ও সুমনকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে সুমন আলী ও রফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ সাড়ে ৬ বছর মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহন প্রমান শেষে আদালতের বিচারক এই রায় প্রদান করেন।