নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোর জেলার প্রায় সাড়ে ৮ লাখ জমির খতিয়ান অনলাইনের আওতায় আসছে। ইতিমধ্যে আট লাখ ছয় হাজার ১২২টি খতিয়ানের বিবরণী অনলাইনে নথিবদ্ধ হয়েছে। অবশিষ্ট আছে ৪০ হাজার ডাটা এন্ট্রির কাজ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেকর্ড রুম সূত্রে জানা যায়, জেলার ৭টি উপজেলায় এস্টেট একিউজিশন অর্থাৎ এসএ রেকর্ডভুক্ত খতিয়ানের সংখ্যা এক লাখ ৮৫ হাজার ১১২, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে অর্থাৎ সিএস খতিয়ানের সংখ্যা দুই লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৪৪ এবং রিভিশনাল সার্ভে অর্থাৎ আরএস খতিয়ানের সংখ্যা তিন লাখ ৮২ হাজার ৯৮৫। সব মিলিয়ে মোট খতিয়ানের সংখ্যা আট লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৯টি।
জেলার খতিয়ানের বিবরণী ইতিমধ্যে চলে গেছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট আর্কাইভে। অবশিষ্ট ৪০ হাজার খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রির কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আদনান চৌধুরী।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজিটাল রেকর্ড রুম’ প্রকল্পের আওতায় নির্ভুলভাবে ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। আউট সোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োজিত শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহণে তিনটি পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে ডাটা এন্ট্রিকারি খতিয়ানের এন্ট্রি দিয়ে তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন তুলনাকারীর কাছে। তুলনাকারীর কাজ শেষ হলে ফাইল যাচ্ছে যাচাইকারীর কাছে।
ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রমের কর্মী গোলাম রাব্বানী জানান, নির্ধারিত সার্ভারে কাঙ্খিত গতি থাকলে দিনে একশ থেকে দেড়শটি খতিয়ানের এন্ট্রি সম্ভব। তুলনাকারী শামসুর তাজবীর এবং যাচাইকারী রাজু আহমেদ বলেন, দিনে আড়াইশ থেকে তিনশ খতিয়ানের তুলনা ও যাচাই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আউটসোর্সিং ভিত্তিতে নিয়োজিত এন্ট্রিকারীরা খতিয়ান প্রতি এন্ট্রি কাজের জন্যে আট টাকা এবং তুলনাকারী ও যাচাইকারীরা তাদের কাজের জন্যে খতিয়ান প্রতি দুই টাকা করে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন।
সর্বশেষ মাঠ জরিপের আরএস খতিয়ান ঠিক থাকলেও এসএ এবং সিএস খতিয়ানের অনেক রেজিস্টার খাতা জরাজীর্ণ হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ওই রেজিস্টার খাতা সংগ্রহ করে কাজ করা হয়েছে বলে রেকর্ড রুম সূত্রে জানা গেছে।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. শরীফুন্নেছা বলেন, অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কার্যক্রম শেষ হলে বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে জমির মালিক ভূমি মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভে জমির প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দেখতে পারবেন এবং স্বাক্ষর বিহীন প্রিন্ট আউট কপিও নিতে পারবেন। আর অনলাইনে রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ান প্রাপ্তির আবেদন করা হলে স্বাক্ষরযুক্ত খতিয়ান মাত্র এক কর্ম দিবসের মধ্যে আবেদনকারীর ঠিকানায় পোস্ট করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ জানান, জমির খতিয়ানের অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কার্যক্রম শেষ হলে সেবা গ্রহীতা ঘরে বসেই তাদের জমির অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং অতি দ্রুত জমির খতিয়ান হাতে পাবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে তৈরি হবে আরও একটি মাইল ফলক।