রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / নাটোরের গুরুদাসপুর থানার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

নাটোরের গুরুদাসপুর থানার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নাটোরের গুরুদাসপুর থানার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা দায়েরের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামী আশরাফুল ইসলাম (৪২) কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। আজ ২ মার্চ সকাল পৌনে নয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানাধীন গোলচত্তর থেকে তাকে গ্ৰেফতার করা হয়। আশরাফুল ইসলাম উপজেলার খামার নাছকৈড় এলাকার আব্দুস সামাদ এর ছেলে।

উল্লেখ্য যে, এজাহার সূত্রে জানা যায়, মৃত মফিজুল ইসলাম (২৫) ও আসামী মোঃ আল হাবিব সরকার এর স্ত্রী মোছাঃ তানজিলা বেগম চাচকৈড় খলিফাপাড়া গ্রামে “মাফি বিস্কুট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্টরী”তে শ্রমিকের কাজ করত। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে দশটার দিকে মৃত মফিজুল ইসলাম তার বসতবাড়ি হতে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় তার মা তাকে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে গুরুদাসপুর থানায় জিডি করেন। এতে আল হাবিব সরকার ও তার স্ত্রী তানজিলা বেগম এর দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দিলে তানজিলা বেগম কোর্টে মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় আসামী আল হাবিব সরকার জেল হাজতে আটক আছে। জেল হাজতে আসামী আল হাবিব সরকারের সাথে চাচকৈড় খলিফা পাড়া এলাকার মোজাফফর মুন্সির ছেলে মোঃ জাকির মুন্সি এর পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। বন্ধুত্বের ফলে মোঃ জাকির মুন্সির নিকট আসামী আল হাবিব সরকার প্রকাশ করেন যে, তার স্ত্রী তানজিলা বেগম ও মৃত মফিজুল ইসলাম চাচকৈড় খলিফাপাড়া গ্রামে মাফি বিস্কুট এন্ড ব্রেড ফ্যাক্টরীতে কাজ করাকালীন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই প্রেমের বিষয়ে তার শ্বশুর আসামী আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা (৫৫) এর বিচার দেয় এবং মফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে খুন করার হুমকি দেয়। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত এগারোটার দিকে আসামীগন পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তানজিলা বেগম কে চাপ সৃষ্টি করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মফিজুল ইসলামকে আসামী আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা এর বাড়িতে ডেকে নিয়ে মোঃ আশরাফুল ইসলামসহ অন্যান্য আসামীগণ মফিজুল ইসলাম এর মুখে কচটেপ দিয়ে বসত বাড়ীতে আটকে দেয়। আসামীগণ মফিজুল ইসলাম কে মাটিতে ফেলে দিলে আসামী তারা খলিফা মফিজুল ইসলাম এর গলায় পা দিয়ে মাটির সাথে চেপে ধরে। তখন আশরাফুল ইসলাম মফিজুল ইসলামের বুকের উপর পা তুলে ধারালো শাবল দিয়ে বুকে স্বজারে আঘাত করে।

ফলে শাবলের ধারালো অংশ মফিজুল ইসলাম এর বুকের ভিতর ঢুকে যায় এবং ঘটনাস্থলে মফিজুল ইসলাম এর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে আশরাফুল ইসলাম অন্যান্য আসামীসহ মফিজুল ইসলাম এর মৃতদেহ একটি প্লাস্টিকের রস্তায় ভরে বাড়ীর পাশের্ব মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির পাশের্ব মাটিতে পুতে রাখে। জনৈক মোঃ জাকির মুন্সি জেল হাজত থেকে জামিন পেলে সে বিষয়টি মৃত মফিজুল ইসলাম এর মা সহ অন্যান্য লোকজনের নিকট প্রকাশ করে। পরবর্তীতে মৃত মফিজুল ইসলাম এর মা বাদী নাটোর জেলার গুরুদানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা রুজুর পর থেকেই আশরাফুল ইসলামসহ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীগণ আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্তকারী অফিসার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য সিপিসি-২, নাটোর, র‍্যাব-৫ বরাবর অধিযাচনপত্র প্রদান করেন।

তৎপ্রেক্ষিতে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ ছায়াতদন্ত শুরু করে। র‍্যাব-৫, নাটোর ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আশরাফুল ইসলাম এর অবস্থান সনাক্ত পূর্বক জানতে পারে যে, আসামী আশরাফুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানাধীন গোলচত্তরে অবস্থান করছে। আজ ২ মার্চ সকাল পৌনে নয়টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানাধীন গোলচত্তর থেকে তাকে গ্ৰেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামীকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও দেখুন

নাটোরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখার কাউন্সিল

নিজস্ব প্রতিবেদক………………..নাটোরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার বেলা ১২ …