নিজস্ব প্রতিবেদক,:
কয়েক বছর থেকে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগরের ভট্টপাড়ায় শতবছরের পুরোনো কালীমন্দিরে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দে পূঁজা-অর্চনা করতে পারছেন না এক পক্ষের ২০টি পরিবার। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে,যেকোন সময় অপ্রতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করছে এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিয়ে নলডাঙ্গা থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয় ভট্টপাড়া কালী পূঁজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি শুসান্ত কুমার সরকার। নলডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের ভট্টপাড়ায় শতবছরের কালী মন্দিরে শতাধিক পরিবার একসঙ্গে পূঁজা- অর্চনা করে আসছিলো। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে পূজা উৎযাপন কমিটির নেতৃত্ব ও জমি ও আয়-ব্যায় হিসাব নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষ দুইভাগে বিভক্ত হয় এই সমাজ। এক পক্ষের ৮০পরিবার এবং অপর পক্ষের ২০ পরিবার রয়েছে। ৮০ পরিবারের নেতৃত্ব দেয় নীরেন চন্দ্র নাথ ও ২০ পরিবারের নেতৃত্ব দেয় প্রফেসর শুসান্ত কুমার সরকার।
২০ পরিবারের পক্ষে প্রফেসর শুসান্ত কুমার সরকার অভিযোগ করে বলেন,এই মন্দিরের সরকারি অনুদানের আয়-ব্যায়ের হিসাব ও জমি বিক্রি ও প্রাচীর নির্মাণ নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। এই কারণে আমাদেরকে সেখানে ৫-৬ বছর থেকে পূর্জা-অর্চনা করতে দেওয়া হচ্ছেনা। এই বিরোধ নিষ্পত্তি জন্য নলডাঙ্গা থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করছি। এই বিষয়ে উপজেলা প্রসাশন নিষ্পত্তি করার চেষ্টার করলেও অপর পক্ষ না বসায় বিরোধ মিটেনি। ৮০ পরিবারের পক্ষে সমাজ প্রধান নীরেন চন্দ্র নাথ ও মাধনগর হিন্দু-বৌন্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার বলেন,এই মন্দিরে তারা জমি বিক্রি করে। কিন্তু সেই জমি এখনও তারা রেজিষ্ট্রি করে দেয়নি।
যার কারনে তাদের পূর্জা-অর্চনা করতে দেওয়া হয়না। জমি মন্দিরের নামে রেজিষ্ট্রি করে দিলে আমরা আবার একসাথে পূর্জা-অর্চনা করবো। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদে নাটোর জেলা সভাপতি চিত্তরঞ্জন সাহা বলেন,আমরা গত ২২ সেপ্টম্বর শুক্রবার দুই পক্ষকে নিয়ে প্রশাসনের সাথে বসে বিরোধ নিষ্পতি করার কথা ছিল।এক ৮০ পরিবারের পক্ষ বসেনি।প্রশাসন যদি শক্ত অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষকে ডেকে বিরোধ নিষ্পতি করতে সকল ব্যবস্থা করতে পারবেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নলডাঙ্গা উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক বৃন্দাবন কুমার বলেন,আমরা বিষয়টি নিয়ে অনেক আগে নিষ্পত্তি করা হয়েছিলো কিন্তু সেখানে মন্দিরের নামে ২ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে না দেওয়ার কারনে এই বিরোধ চরম আকার ধারন করে।
আমরা গত ২২শে সেপ্টেম্বর বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য প্রসাশন সাথে নিয়ে বসার কথা থাকলে একজনের বিয়ের দাওয়াতে থাকায় বসা সম্ভব হয়নি। আগামী সপ্তাহে জেলা কমিটি-থানা কমিটি এবং দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বসে নিষ্পত্তি করা হবে। নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন,হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটি ও থানা কমিটির মধ্যে সমনয়হীনতার কারনে আমরা এই বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। দুই কমিটি একসাথে বসলে এই বিরোধ নিষ্পত্তি হবে।