নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর:
৩৯ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত
উত্তর বঙ্গের ভারী শিল্প নাটোরের লালপুরের গোপালপুর সুগার মিলস্ এর ৩৯ কোটি টাকার চিনি অবিক্রিত এবং শ্রমিক – কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন প্রায় ৩ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই বোঝা মাথায় নিয়ে ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমের প্রস্তুতি নিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে শ্রমিক – কর্মচারীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
বিগত মৌসুমের উৎপাদিত ৬ হাজার ৫শ মে: টন: চিনি মিলের গুদামে মজুদ রয়েছে । যার মূল্য ৩৯ কোটি টাকা। ২ লাখ ৬৮ হাজার মে:টন: আখ মাড়াই করে ২০ হাজার ১শ মে:টন: চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ । শ্রমিক -কর্মচারীদের বেতন বকেয়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলেও আখাচাষীদের আখের মূল্য পরিশোধ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে জলাদ্ধতা হওয়ার ফলে আখের ফলনে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিল জোন এলাকায় পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াইয়ের কারণে ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমে আখ মাড়াই মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে অনিশ্চিত দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে চাষীদের বিগত মৌসুমের আখের মূল্য সময়মোত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়া এবং কীটনাশক দিতে না পারায় আখচাষীরা মিলে আখ সরবরাহ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে কৃষকরা । ফলে ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দেখা দিয়েছে অংশকা। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ৭টি সাবজোনের মাধ্যমে ৩২ টি কেন্দ্রে আখ করা হয়।
এসব কেন্দ্রে প্রায় ১৮ হাজার আখচাষীরা তাদের আখ বিক্রয় করেন, বিক্রয় আখের মূল্য শিওরক্যাশের দেওয়া হয় আখাচাষীদের। বিগত আখ মাড়াই মৌসুমে মিলটি ৮৭ কোটি টাকা লোকসান করেছে বলে জানা যায়। কারণ হিসেবে তিনি মিল কর্তৃপক্ষ আখ না পাওয়া এবং আখের অভাব কে দায়ী করেছেন মিল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিগত মৌসুমে আবাদের জন্য চাষীদের ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ঋণ আদায় নিয়ে হুমকির মধ্যে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।
আখচাষীদের আবাদের জন্য ঋন ও বিগত মৌসুমে লোকসানের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন মিলের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) হিরন্ময় বিশ্বাস ।
এবিষয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ূন কবীর বলেন, আমাদের মিলে ৬ হাজার ৫শ মে:টন:চিনি অবিক্রিত রয়েছে। যার মূল্য ৩৯ কোটি টাকা। এই চিনি বিক্রি হলে অর্থ নৈতিক সংকট কেটে যাবে।
তিনি আরো বলেন, পাওয়ার ক্রাশার মেশিনে আখ মাড়াই বন্ধ হলে এবং উন্নত জাতের আখ মিলে সরবাহ করা গেলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এ সংকট কাটিয়ে উঠতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ।