নাজমুল হুদা নন্দীগ্রাম (বগুড়া) থেকে : আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল। আর বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপণের উপযুক্ত সময়। এ বর্ষা মৌসুমে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টি না থাকায় মাঠের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে আমন চাষীদের সেচ পাম্পের পানিই এখন একমাত্র ভরসা। এতে এ উপজেলার কৃষকদের আমন ধান চাষে অনেক খরচ বাড়বে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেই বৃষ্টির পানিতে আমন ধানের চারারোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষকরা। এবার দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে কৃষকরা ধানের চারারোপণ করতে পারছেন না। মাঠে পানি না থাকায় হালচাষ ও ধানের চারারোপণে কৃষকদের তেমন ব্যস্ততাও নেই। এখনও মাঠে মাঠে চরছে গরু-ছাগলের পাল। কোনো কোনো কৃষক সেচ দিয়ে জমি লাগাতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বৃষ্টির অভাবে কিছু জমিতে চারারোপণ করা আউশ ধানের ক্ষেত নিয়েও বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার দলগাছা গ্রামের কৃষক মুনিরুজ্জামান বলেন, নন্দীগ্রামের কৃষকরা আষাঢ়ের ১৫ তারিখের পর ও শ্রাবণের ১৫ তারিখের মধ্যে আমন ধানের চারারোপণ করে। এখন শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আমরা পানির অভাবে জমি লাগাতে পারছিনা। আর কয়েকদিন দেখে সেচের ব্যবস্থা করে জমি লাগাতে হবে।
কালিকাপুর গ্রামের কৃষক রাজু আহম্মেদ বলেন, আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবণ মাসের কয়েকদিন চলে গেলেও বেশিরভাগ কৃষক এখন বাধ্য হয়ে বৈদ্যুতিক পাম্প ও শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধানের চারারোপণের চেষ্টা করছে। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য প্রতি বিঘায় গভীর নলকূপ মালিককে দিতে হবে ১ হাজার টাকা ও শ্যালো মেশিন মালিককে দিতে হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা। যা কৃষকদের বাড়তি খরচ।
নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার আদনান বাবু বলেন, এ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ২০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে খরা চলছে। আমন চাষের এখনও সময় আছে। তবে প্রচন্ড রোদ অব্যাহত থাকলে কৃষকদের সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে আমন ধান চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।