নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর মান্দায় কালোবাজারে বিক্রির জন্য মজুদ করে রাখা কৃষি প্রণোদনার ১২৫ বস্তা সার ও বীজ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে গোপন সুত্রে খবর পেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন উপজেলার বড়পই গ্রামের এমদাদ মাস্টারের ছেলে মাহমুদুল হকের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে এসব সার ও ধানের বীজ উদ্ধার করে। মাহমুদুল হক মান্দা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বাদী হয়ে মাহমুদুল হক ও তেঁতুলিয়া ইউপি সদস্য আতাউর রহমানসহ কয়েকজন অজ্ঞাত নামাকে আসামী করে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলার দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষি প্রণোদনার সার ও বীজ দুটি ভ্যানে করে তেঁতুলিয়া ইউপি সদস্য আতাউর রহমান মাহমুদুল হকের বড়পই গ্রামের বাসায় (উপজেলা কৃষি অফিস সংলগ্ন) নিয়ে যান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় তাৎক্ষনিকভাবে তা উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন স্থানীয়রা। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পৌঁছে মাহমুদুল হকের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে ৪৬ বস্তা ডিএপি, ২৩ বস্তা এমওপি (পটাশ) ও ৬৬ বস্তা(১০কেজির) ধানের বীজ উদ্ধার করে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এমদাদুল হক মোল্লা, ইউএনও আব্দুল হালিম, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইমরানুল হক, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিমসহ গণমাধ্যম কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন। তেঁতুলিয়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের পরিকল্পনাতে এসব প্রণোদনাগুলো নামে বেনামে কৃষি কার্ড দিয়ে উত্তোলন করে পরে সেগুলো খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছিল বলে ধারণা করছেন সচেতনরা।
এ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য আতাউর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের পরামর্শে প্রণোদনার তালিকাভূক্ত কৃষকের কার্ডগুলো সংগ্রহ করেছি। সংগ্রহকৃত কার্ডগুলো দিয়ে কৃষি দপ্তর থেকে সার ও বীজ উত্তোলন করি। পরে উত্তোলনকৃত সার-বীজ দুটি ভ্যানে করে বিক্রির জন্য মাহমুদুলের বাসায় নিয়ে যাই’।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে মুঠো ফোনে কল দিলে মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে অতীতেও বয়স্ক, বিধাব ও স্বামী পরিত্যাক্তা এবং সরকারী চালসহ বিভিন্ন প্রকার দুর্নিতীর অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, কৃষি প্রণোদনার সার বীজ কালোবাজারে বিক্রির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে গতরাতে মামলার দায়ের করেছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন জানান, গত ২০ এপ্রিল মঙ্গলবার চলতি মৌসুমের আউশ প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এবছর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে এ প্রণোদনা দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে প্রণোদনার সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি প্রণোদনার সার ও বীজ মজুদ অবৈধ্য এবং ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাহমুদুল হক ও তেঁতুলিয়া ইউপি সদস্য আতাউর রহমানসহ কতক অজ্ঞাত নামাকে আসামী করে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়েরের করা হয়েছে।
মান্দা থানার ওসি শাহীনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-১/২৫(ঘ) থানায় মামলার দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩১। তিনি বলেন, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও দেখুন
পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …