নারদ বার্তা পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ধর্ষণের শিকারও হলো, মান ইজ্জতও গেলো আবার এক লক্ষ টাকা জরিমানাও দিতে হলো এক গৃহবধূকে। নাটোরে ধর্ষিত হওয়ার পরও ঐ গৃহবধুকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করলো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় প্রধানরা। মঙ্গলবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শালিসে আসতে দেরি করায় ধর্ষিত গৃহবধূর বাবাকেও ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের এক গৃকবধূকে গত ২৯ মে শুক্রবার রাতে ধর্ষণের সময় গৃহবধূর চিৎকারে অভিযুক্ত অমর কুমারকে হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী।
পরে অভিযুক্ত অমরকে পুলিশে সোপর্দ করলে ৩০ মে শনিবার নাটোর সদর থানায় অমর কুমারকে আসামী করে ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী গৃহবধু। পরে পুলিশ অমরকে জেল হাজতে পাঠায়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রামে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী গৃহবধুকে অন্য ধর্মের ছেলে অমরের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অপবাদ দিয়ে এক লক্ষ টাকা এবং গৃহবধুর বাবা শালিসে আসতে দেরি করার অপরাধে এক হাজার টাকা জরিমানা করে চেয়ারম্যান ওমর আলী প্রধান এবং অন্যান্য শালিস প্রধানগণ। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রুহুল আমিন এবং সোবহান আলী নামে দুই শালিস প্রধানকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। তবে তেবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর আলী প্রধান এবং বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বড় প্রধান আব্দুল হাকিম পালিয়ে যান।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, রাতে খবর পেয়ে অভিযুক্ত শালিসকারী গ্রাম্য প্রধানদের আটক করে আনা হয়। ধর্ষণ মামলার কোন শালিস করার এখতিয়ার কারো নেই। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ওমর আলী প্রধান বলেন, ধর্ষিত মহিলার স্বামী দুবাই প্রবাসী এবং এই মহিলা যেহেতু মুচি সম্প্রদায়ের ছেলের সাথে শারীরিক সম্পর্কের অপরাধ করেছে, সেহেতু মহিলার দুবাই প্রবাসী স্বামী মসজিদ নির্মাণের জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে চায়। সেই টাকার অংকটাই আমরা শালিসে বসে রায় দিয়েছি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত ওমর আলী প্রধান নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য এবং তেবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
