নিউজ ডেস্কঃ
সংক্রমণ সামলে ওঠা ব্যক্তিকে ফের আক্রমণ করতে পারে করোনাভাইরাস -এমনটাই বিশ্বাস করে আসা হচ্ছিল এতদিন। বেশ কিছু প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পর্যন্ত করোনাভাইরাসের চরিত্র নিয়ে সন্দিহান ছিল। তবে এই প্রথম গবেষকরা জোর গলায় দাবি করলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্বিতীয়বার হয় না। খবর এনডিটিভির।
ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। চারপাশে মৃত্যুমিছিলের ভিড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে বাগে আনে দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু, দুশ্চিন্তার কালোমেঘ ঘিরে ধরে যখন দ্বিতীয় বার কয়েক জনেক শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ৯০ জনেরও বেশি পুনরায় করোনা আক্রান্ত বলে দাবি করা হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসাবিষয়ক গবেষকরা এতদিন পর জানাচ্ছেন, পরীক্ষার ভুলেই এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। একজনও দ্বিতীয়বার আক্রান্ত নয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিষয়ক কেন্দ্র সিডিসি-র গবেষকরা জানান, করোনাভাইরাসের পক্ষে মানবদেহে দ্বিতীয়বার হানা দেওয়া অসম্ভব। তারা জানান, নিষ্ক্রিয় ভাইরাস ও জীবন্ত ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারেনি ওই টেস্টগুলো। তার জেরেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।
সিডিসি জানিয়েছে, এইচআইভি ও চিকেনপক্সের মতো ভাইরাসগুলো মানব কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে। পুনরায় সক্রিয় হওয়ার আগে এই ভাইরাসগুলো বছরের পর বছর সুপ্ত থাকতে পারে। কিন্তু করোনাভাইরাস হোস্ট সেলের নিউক্লিয়াসের বাইরে থাকে। এর মানে, এই ভাইরাসটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ বা পুনরাবৃত্তি ঘটায় না।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসি কমিটির প্রধান ড. ওহ মায়ং ডন দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, একবার আক্রান্ত হলে পুনরায় সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, ভাইরাস একবার আক্রমণ করলে, অ্যান্টিবডি থেকে সংক্রমণরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ঘটনা বিরল।
ব্রিটেনের ব্রাইটন ও সাসেক্স মেডিক্যাল স্কুলের সংক্রামক রোগের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কোহেন বলেন, অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণের ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, একবার কেউ সংক্রমিত হলে, শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই তাদের আর সংক্রমণ ঘটে না। তবে সব ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম হয়।