নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগাতিপাড়া:
পান বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটা খাবার, তাই এর দামও এখন অনেক রকম। একেকটি খিলি পান বিক্রি হয় ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। আর এ পান যদি একজন একহাত ওয়ালা মানুষ তৈরি করে দেন তাহলে এর কদর অনেক বেশি।
বলা হচ্ছে নাটোরের বাগাতিপাড়ার সাদিমারা বটতলা মোড়ের সুপরিচিত পান বিক্রেতা মহসিন আলীর কথা। একই স্থানে দীর্ঘ ১৮-২০ বছর ধরে একহাত নিয়েই খিলি পানের ব্যবসা করছেন তিনি। এক হাঁত নিয়ে অনায়াসে খুব চমৎকার ভাবে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে ক্রেতাদের মন জুগিয়ে পান তৈরি করছেন তিনি। এতে একদিকে যেমন তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন অন্যদিকে পান বিক্রি করে তার ভাগ্যবদল হয়েছে। প্রতি মাসে এখান থেকেই ২০-৩০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে তার। মহসিনের পানের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, তিনি হরেক রকম জর্দা ও মসলা দিয়ে বিভিন্ন স্বাদের পান তৈরি করেন। বাহারি এ পান খেতে দূরদূরান্ত থেকে লোক আসে সাদিমারা বটতলা মহসিনের পানের দোকানে। সাদিমারা বটতলা মোড়ের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পান বিক্রি করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন মহাসিন। এখন শুধু বাগাতিপাড়া নয় বিভিন্ন এলাকার মানুষ শখের বসে পান খেতে ও দেখতে আসেন তাকে সাদিমারা বটতলা মোড়ের এ ছোট্ট দোকানে।
মহসিন এর আগে ২-৩ টাকা করেও পান বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন সব জিনিস-পত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি মিষ্টি ও জর্দা পানের মূল্য ৫ টাকা করে নেন। মিষ্টি পান ক্রেতা বাগাতিপাড়া পৌর এলাকার আজাদ আলী বলেন, আমি সাধারণত পান খাই না। তবে যখন কোনো প্রয়োজনে এদিকে আসি তখন মহাসিনের এ মিষ্টি পান খেতে আমি ভুল করি না। ৫ টাকা করে ২টা পান কিনেছি খাওয়ার জন্য।
অপর ক্রেতা স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বাদশা, তিনি জানান, এ দোকানে সব সময় ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে শুক্রবারেও অনেক দূর থেকে মানুষ মহাসিনের পান খেতে আসেন।
পান বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়া মহসিনের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। প্রতিবেদককে তিনি বলেন, প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকার পান বেচাকেনা হয়। ১৮-২০ বছর ধরে পান বিক্রি করছি। এর বাইরে অন্য কিছু করি না। প্রতি মাসে এখান থেকেই ২০-৩০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। এ দিয়ে খুব ভালোভাবে আমার সংসার চলে। পান বিক্রি করে কিছু অর্থ সম্পদও কিনেছি। আমার কোনো অভাব নেই। অন্যদের তুলনায় অনেক ভালো আছি আমি। আর শুরু থেকে আমার একহাত নেই। তবে বাকি এ একহাত নিয়ে আমাকে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়না।