নিউজ ডেস্ক:
করোনাকালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তো। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সেই বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করে চলছে।
অর্থমন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র মে মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ২ হাজার ৭৬ মিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ৩৬১ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩০ মে পর্যন্ত এক বছরে রেমিটেন্স এসেছে ২২ হাজার ৭৪৮ মিলিয়ন ডলার যা এর আগের বছরে একই সময়ে এসেছিল ১৬ হাজার ২২৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরে প্রায় ৪০.১০ শতাংশ রেমিটেন্স বেশি এসেছে।
শুধু আর্থিকভাবেই নয়, করোনা মোকাবিলায় সরকারের মনোবল ধরে রাখতেও বড় ভূমিকা রেখেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সের কারণেই তারল্যসংকট কাটাতে পেরেছে ব্যাংকগুলো। রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় করোনাকালেও মানুষ বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয় অব্যাহত রাখতে পেরেছে। রেমিট্যান্সের টাকায় তৈরি হয়েছে ছোট ছোট উদ্যোক্তাও। শক্তিশালী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে গ্রামীণ অর্থনীতি। রেমিট্যান্সে ভর করে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা এবং করোনায় বিশ্বব্যাপী সুদের হার কমে যাওয়াসহ নানা কারণে প্রবাসীদের অনেকে জমানো টাকা দেশে পাঠানোয় সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে রেমিট্যান্সের বিপরীতে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এতে করে আগে যারা হুন্ডি বা অবৈধ চ্যানেলে দেশে অর্থ পাঠাতেন, তাদের অনেকেই এখন ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে ১৭৪টি দেশে বাংলাদেশ শ্রমিক পাঠাচ্ছে, যা প্রায় ১ কোটি ২০ লাখের বেশি, যাদের তিন-চতুর্থাংশ নিয়োজিত রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রেমিট্যান্স আয়ের তিন ভাগের দুই ভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী জালানি তেলের দরপতন, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটনশিল্পে ধস, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিকূলতায় সংকটে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। যে কারণে কর্মী ছাঁটাই ও বেতন বন্ধসহ বহুবিধ সমস্যার শিকার হচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত রেমিট্যান্স-যোদ্ধারা।