নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ১২ নারী গৃহকর্মী। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অনুসন্ধান ও প্রচেষ্টায় দেশে ফিরলেন তারা।
শনিবার (৩ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
তিনি জানান, গত মে একজন নারী ভুক্তভোগীর স্বামী এপিবিনের কাছে অভিযোগ জানান, তার স্ত্রী ৬ মাস আগে এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ করতে সৌদি আরব গিয়েছেন। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছেন না।
লোকমুখে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এপিবিএনের সহযোগিতা চান। একই সঙ্গে যে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সৌদিতে গিয়েছেন সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এরপর এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দল বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে।
জিয়াউল হক আরও জানান, এরপর ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী কোথায় কী অবস্থায় আছে সে বিষয়েও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এজেন্সি বিষয়টি বুঝতে পারে যে ইস্যুটি নিয়ে এপিবিএন গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে। এ সময় অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়, গা ঢাকা দেন সেখানে কাজ করা কর্মচারীরাও।
তারা মনে করেছে ভুক্তভোগী নারীদের দেশে ফিরিয়ে আনলে হয়তো আইনগত জটিলতার বিষয়টি থেকে মুক্তি পাবেন। যার কারণে ট্রাভেল এজেন্সি সৌদি থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়া ১২ নারী ভুক্তভোগীকে বিকেলে দেশে ফিরিয়ে আনে। এসময় অভিযোগ জানানো ভদ্রলোকের স্ত্রীসহ আরও ১১ জন ভুক্তভোগী নারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
বিমানবন্দরে পৌঁছালে এপিবিএন তাদের বিমানবন্দরে রিসিভ করে। এসময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগামের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। দেশে ফিরে আসা নারীদের কাছ থেকে এপিবিএনের তদন্ত দল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগীরা জানান, তারা প্রত্যেকেই বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাভেল এজেন্সিসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।