নিউজ ডেস্ক:
দেশ ও দেশের বাইরে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ সংক্রান্ত তথ্য সুশৃঙ্খলভাবে সংরক্ষণ ও আদান-প্রদানের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ‘বোমা ডাটা সেন্টার’ চালু করেছে বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম ডিসপোজাল ইউনিট। নতুন এ বোমা ডাটা সেন্টারটিতে বোমা ও ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ও জঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
জঙ্গিরা যেমন নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম করার চেষ্টা চালাচ্ছে ঠিক তেমনই সিটিটিসিও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন প্রযুক্তি সংযুক্ত করছে। বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে এই বোমা ডাটা সেন্টার রয়েছে বলা জানা যায়।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।
সিটিটিসি জানায়, ইন্টারপোলসহ অন্যান্য দেশের বিডিসির ফোকাল পয়েন্ট তথা ইনফো এক্সচেঞ্জ হাব হিসেবে কাজ করবে এই বোমা ডাটা সেন্টার। বিস্ফোরণের আগে ও পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দলের সংগৃহীত আলামতের নমুনা, প্রকৃতি, ছবি বিশ্লেষণ, নিষ্ক্রিয়করণ কৌশল ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা সংক্রান্ত তথ্যাদি লিপিবদ্ধ থাকবে বোমা ডাটা সেন্টারে।
ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত বোমা ও আইইডির ৬১টি বাস্তবসম্মত রেপ্লিকা বোমা আর্কাইভে সংরক্ষণ করার স্লট রয়েছে। ভবিষ্যতে বোম ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত তথ্য অপরাধীচক্র সনাক্তকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বোমা ও আইইডির বাস্তবসম্মত প্রতিরূপ বোম আর্কাইভে সংরক্ষণ করা হবে।
বোমা সংক্রান্ত তথ্যাদি সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের জন্য বিস্ফোরক সংক্রান্ত জ্ঞান চর্চা আবশ্যক। এজন্য বোম ডিসপোজাল ইউনিটে নিয়োজিত সদস্যদের জ্ঞান বিকাশের জন্য আইইডি রিসোর্স সেন্টারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বই ও প্রকাশনাও রয়েছে।
বিস্ফোরক সংক্রান্ত বিষয়ে অধ্যয়নের মাধ্যমে বিস্ফোরক উপাদান, ধরণ, প্রকৃতি, ব্যবহার ক্ষেত্র, নিরাপদ নিষ্ক্রিয়করণ কৌশল ও কেস স্টাডি পর্যালোচনা করা হবে। এছাড়া এতে একটি ই-লাইব্রেরি রয়েছে।
প্রযুক্তিগত বুদ্ধিমত্তা ও রাসায়নিক শোষণে বিভিন্ন ধরণের বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যাদির প্রকৃতি ও ধরণ বিশ্লেষণ এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা সামগ্রীর কারিগরি দিক বিশ্লেষণ করা হবে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে বোমা নিষ্ক্রিয়করণের বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।
আদালতে উপস্থাপন যোগ্য রেপ্লিকা তৈরি করে বোমা আর্কাইভে সংরক্ষণ এবং উপস্থাপন করা যাবে। তাছাড়া আইইডি ও জঙ্গিবাদের গতিপ্রকৃতি সমন্ধে বুলেটিন ও নিয়মিতভাবে প্রকাশও এই বোমা ডাটা সেন্টারের অন্যতম উদ্যোগ।
সিটিটিসি জানায়, দেশ ও বিদেশে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ সংক্রান্ত তথ্য সুশৃঙ্খলভাবে সংরক্ষণ ও আদান-প্রদানের জন্য তৎকালীন সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলামের পরিকল্পনায় বোমা ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। যা বর্তমান সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামানের নির্দেশনায় স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মান্নান ও অতি. উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ চৌধুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে বোমা ডাটা সেন্টারটি পূর্ণাঙ্গ ও কর্ম উপযোগী রূপ লাভ করে।