বিদেশি দূতাবাসে চাকরি করলেও তারা বাংলাদেশি, অথচ আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নিয়ম ভেঙে ইসির এ পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার প্রেক্ষাপটে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেছেন, এটা ঠিক হয়নি।
অভিযোগের মুখে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বিদেশি সংস্থার যেসব বাংলাদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন, তাদের কাজে নজর রাখবেন তারা।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় কর্মরত পশ্চিমা কূটনীতিকরা বেশ তৎপর। ইসি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রার্থীর সঙ্গেও দেখা করে তারা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা থেকে তাদের এই পদক্ষেপ।
এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলো ইসির কাছে থেকে পর্যবেক্ষক কার্ডও নিয়েছে।
ইসির কাছ থেকে পাওয়া তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০টি দেশের মিশনের মোট ৭৪ জন পর্যবেক্ষক কার্ড পেয়েছেন, তবে এর মধ্যে ২৮ জন রয়েছেন বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন।
বাকি ৪৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড পেলেও বাংলাদেশি ২৮ জনের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দেওয়াটা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় (ধারা ১২: বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ) বলা হয়েছে- নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা/কূটনৈতিক মিশনের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হওয়ার বিধান নেই।
আন্তর্জাতিক সংস্থা/কূটনৈতিক মিশনের বিদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং স্থানীয় কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য হবে। বিদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী এবং স্থানীয়দের স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
স্থানীয় ১১টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ১ হাজার ১৩ জন বাংলাদেশি দেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে ইসির তালিকাভুক্ত হলেও চাকরির সুবাদে দূতাবাসের ওই ২৮ বাংলাদেশি বিদেশি পর্যবেক্ষকের কার্ড করিয়ে নিয়েছেন।
ভোটের দিন বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে ইসি; ফলে বাংলাদেশি হয়েও ২৮ জন পাচ্ছেন বিশেষ সুবিধা, অথচ হাজারের বেশি দেশি পর্যবেক্ষকের জন্য সেই বন্দোবস্তু নেই।