নিউজ ডেস্ক
আজ ১৭ আগস্ট। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ভয়াল দিন। ২০০৫ সালের এ দিনে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) একযোগে ৬৩ জেলার ৪৩৪ স্থানে বোমার বিম্ফোরণ ঘটায়।
সরকারী মদদে জঙ্গিবাদের বাংলাদেশ আর চাই না। বিএনপি জামায়াতের শাসন আমল(২০০১ থেকে ২০০৬) এ সরকারী এমপি মন্ত্রীদের মদদে সারা বাংলাদেশে শক্ত অবস্থান তৈরি করে জঙ্গিরা। মুছে যায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩ টি জেলায় মোট ৪৩৪ টি স্থানে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটে। ওইদিনের ঘটনায় দু’জন নিহত এবং অর্ধশত আহত হন। দেশে এরপর শুরু হয় জেএমবির আত্মঘাতি বোমা হামলা।
পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ধারাবাহিক বোমা হামলায় বিচারক ও আইনজীবীসহ ৩০ জন নিহত হয়। আহত হয় ৪ শতাধিক। ওই বছরের ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষীপুরের আদালতে জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত এবং বিচারকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
এর কয়েকদিন পর সিলেটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীর ওপর বোমা হামলার ঘটনায় তিনি এবং তার গাড়িচালক আহত হন। ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় আত্মঘাতি জঙ্গিরা। এতে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাড়ে এবং সোহেল আহম্মদ। এই হামলায় আহত হন অনেক মানুষ।
সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি এবং চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাকে প্রবেশ করে আত্মঘাতি এক জঙ্গি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এই হামলায় আইজনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। নিহত হয় আত্মঘাতি হামলাকারী জঙ্গিও।
একই দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে জেএমবির আত্মঘাতি জঙ্গিরা বিষ্ফোরণ ঘটায়। সেখানে রাজিব বড়ুয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। পুলিশসহ আহত হন প্রায় অর্ধশত।
১ ডিসেম্বর গাজীপুর ডিসি অফিসের গেটে আবারো বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত হন গাজীপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় ভয়াবহ বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর পাড় উদীচী শিল্প গোষ্ঠীর অফিসের সামনে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতি জঙ্গি দল। সেখানে স্থানীয় উদীচীর দু’নেতাসহ ৮ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক।
১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ঢাকা মহানগর ছাড়া সারাদেশে দায়ের করা হয় ১৩৮ টি মামলা। হামলার ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ১ হাজার ৪০০ জন গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে ৯৮১ জনকে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়। এছাড়া, রাজধানীর ৩৩ টি স্পটে বোমা হামলার ঘটনায় ১৮ টি মামলা দায়ের হয়। এই ১৮ টি মামলার মধ্যে ৫ টি মামলার বোমার বাহককে এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।