নিউজ ডেস্ক:
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি বলেছেন, ভূমিকম্প ও বজ্রপাত ছাড়া অন্য সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। উন্নত দেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। পূর্বপ্রস্তুতি ও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতার কারণে বাংলাদেশে দুর্যোগে এখন মৃত্যু নেই বললেই চলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দুর্যোগসহনশীল দেশে পরিণত হব। সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নত ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এবং স্মার্ট হিসেবে গড়ে উঠবে।
গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৩ সামনে রেখে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের কনফারেন্স হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারের দুর্যোগ প্রশমন দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি, দুর্যোগসহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’। গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুগ্মসচিব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পরিচালক নাহিদ সুলতানা মল্লিক।
গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এনডিসি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন, দুর্যোগঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্ধন প্রকল্প পরিচালক সুব্রত পাল চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এম আবেদ আলী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী মবিনুর রহমান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের প্রোগ্রামার মনসুরুল হকের সঞ্চালনায় বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান বার্তা সম্পাদক কামাল মাহমুদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৬৪ জেলায় ৬৬টি ত্রাণ গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্গত এলাকার মানুষকে উদ্ধার করতে ৬০টি মাল্টিপারপাস রেসকিউ বোট তৈরি করা হয়েছে। এ বোটগুলোয় প্রতিবন্ধীরাও সহজে উঠতে পারবে। প্রতি বছর দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দুর্যোগসহনশীল দেশে পরিণত হতে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ভূমিকম্প ও বজ্রপাত ছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা ভালো অবস্থানে পৌঁছেছি। ভূমিকম্প ও বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এনামুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতি কমাতে গত বছর বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) বাস্তবায়ন করেছে। এ কোড মেনেই নির্মাণ করতে হবে ভবন। কোড মেনে ভবন নির্মাণ হলে সেটা ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হবে। একই সঙ্গে সব ভবন পরীক্ষা করা হবে। দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে যেসব ভবন নির্মাণ হয়ে গেছে, সেগুলোকে রেট্রোফিটিং করে ভূমিকম্পসহনশীল করা হবে। ভূমিকম্পে ক্ষতি কমাতে জাপানের মতো অবকাঠামো নির্মাণে আমরা কাজ করছি। ১৫ অক্টোবর জাপানের সঙ্গে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা হবে। ওই সভার পর একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হবে বলে তিনি জানান।
ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রান্তিক মানুষ, ভূমিকম্পে বিপদে পড়ে শহুরে মানুষ। তাই আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে হবে। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় দরকার জাতীয় ঐক্য। সবাই একযোগে চেষ্টা করলে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলা সহজ হয়ে যায়।