জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম জজ মো. আছাদুজ্জামান তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগামী ১৬ মে তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান পলাতক রয়েছেন। এই অবস্থায় গত ২৯ মার্চ এ দুই আসামির পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করেছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার। আসামিরা পলাতক থাকায় গতকাল আবেদনটি নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে গত ৯ এপ্রিল আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়েছিল।
গত বছরের ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর ৫ জানুয়ারি তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এতেও তাঁরা আদালতে হাজির না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি তাঁদের আদালতে হাজিরে গেজেট (বিজ্ঞপ্তি) প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩১ জানুয়ারি বিজি প্রেস থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক ও জোবাইদাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে চার কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও এর প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা আলাদা রিট আবেদন খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।
ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তাঁর (জোবাইদা) মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় আদালতে। এর পরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবাইদা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।