নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি(দিনাজপুর):
দিনাজপুরের হাকিমপুরে টায়ার পুড়িয়ে তৈরী হচ্ছে জ্বালানি তেল। এতে একদিকে যেমন বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। অন্যদিকে মরছে পশুপাখি, গাছপালা ও মাছ। স্থানীয়দের অভিযোগের পরও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অজ্ঞাত শক্তিতে চলছে এই টায়ার পোড়ানো কারখানা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা, হাকিমপুর (হিলি) পৌরসভার ৯ নং ওয়র্ডের ছাতনী চারমাথা থেকে রাঙ্গামাটিয়া সড়কের পাশের্^ একটি টায়ার পোড়ানো কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানে দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে টায়ার। সেই টায়ার পুড়তে জ¦ালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন।
টায়ার পোড়ানো যে কি পরিমাণ পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর তা মানুষের চোখ ফাঁকি দিতে দিনে টায়ার না পুড়িয়ে রাতেই কারখানাটিতে টায়ার পোড়ানো হচ্ছে।
এলাকাবাসির অভিযোগ, টায়ার পোড়ানো এই কারাখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দুষিত হচ্ছে। ফলে গাছ পালা দিন দিন মারা যাচ্ছে। এছাড়াও টায়ার পোড়ানোর উৎকট গন্ধের কারণে এলাকাবাসির বসবাস প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এছাড়াও স্কুল-কলেজ গামী ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলে সাবাশ প্রসাশ নিতে বিগ্নতা সৃষ্টি হচ্ছে।
ফলে নিরুপায় হয়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মাসে শতাধিক ভুক্তভোগী স্বাক্ষরিত হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিন মাস অতিবাহিত হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে ভোক্তভোগীদের মাঝে।
তরিকুল ইসলাম নামে এক ভোক্তভোগী জানান, ওই কারখানার পশের্^ আমার এক একর জমি রয়েছে। টায়ার পোড়ানোর কারণে আমার জমিতে উৎপাদিত ধানের চালে এক ধরণের দুর্গন্ধ হয়। আর সেই চালের ভাত খাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ধানগুলো বিক্রি করে বাজার থেকে চাল কিনতে হয়।
অভিযোগকারী হাসন্দর জামান জানান, টায়ার পোড়ানোর কারণে এলাকার ফলগাছগুলোতে ফল ধরছে না।
মশিউর রহমান নামের অভিযোগকারী জানান, কারখানাটির বর্জ পাশের তুলশিগঙ্গা নদিতে যাওয়া নাদীর মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম জানান, কারখানাটির পাশের্^ আমার জমি রয়েছে। ওখানে টায়ার পোড়ানোর কারণে এক ধরণে দুগন্ধ সৃষ্টি হয়। ফলে আমার জমিতে কোন কৃষি শ্রমিক কাজ করতে চায়না। বাধ্য হয়ে অল্প টাকায় জমি বর্গা দিয়েছি।
এ বিষয়ে কারখানাটির মালিক দিপক কুমারের সাথে কথা বললে তিনি কোন বক্তব্য না দিয়ে জানান, আপনার কি সমস্যা সেটা বলেন, সমাধান করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নুর-এ আলম বলেন, অভিযোগ প্রেক্ষিতে কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং যেহেতু তাদের পরিবেশ অধিদপপ্তরের ছাড় পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তাই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়া পত্র ছাড়া কারখানাটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।