নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়া,,,,,,,,নাটোরের সিংড়ার সফল কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ করিম মিঠু দার্জিলিং
কমলা চাষে সফলতা অর্জন করেছেন। এ বছর ৫/৬ লাখ টাকার লাভ দেখবেন
বলে আশাবাদী মিঠু। তার বাগানে সাদকি, ম্যান্ডারিন ও নাকপুরি
জাতের ১৬০টি কমলাগাছ রয়েছে ।
প্রতিটি গাছে কমলা ধরা শুরু হয়েছে। সুন্দর সুমিষ্ট, রসালো কমলা
হবে তা তিনি কল্পনাই করেননি। কল্পনায় না থাকলেও বাস্তবে এখন
দার্জিলিং কমলা। আর প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলে কমলা চাষে অপার
সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মিঠু পাটকোল গ্রামের মো. আ. লতিফের
ছেলে।
সমতল ভ‚মিতে কমলা হবে কিনা এমন দুশ্চিন্তা ও আর চ্যালেঞ্জ নিয়েই
কমলাগাছ রোপণ করেছিলেন এই উদ্যোক্তা। উদ্যোক্তা মাসুদ করিম মিঠুর
ধান-চালের ব্যবসা ছিল। করোনায় ব্যবসা মন্দা হলে ২০২০ সালে
ইউটিউবে ভিডিও দেখে মিলের সমতল ভ‚মিতে চারা রোপণ শুরু করেন।
সেই চাতালে গড়ে উঠেছে মিঠুর কমলা বাগান। যার নাম রাজ্যভেলি।
সিংড়া পৌর শহরের পাটকোল এলাকায় প্রায় ১ বিঘা জমিজুড়ে শোভা
পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের ১৬০টি কমলাগাছ। সেই গাছগুলোতে ফল আসা
শুরু হয়েছে। দর্শনার্থীরা দেখতে আসছেন। কেউ কেউ পরিবারের জন্য
নিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্যভেলি সম্মিলিত বাগানে রয়েছে পেয়ারা, বড়ই,
পেঁপে, আম, আঙুর, বেগুন, মরিচ, টমেটো, ফুলকপি, চাল কুমড়াসহ
বিভিন্ন ফল ও সবজি গাছ ও।
কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ করিম মিঠু বলেন, ছোটবেলা থেকে কৃষির
প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ বাগানের শুরু। করোনায় ধান-চালের ব্যবসা
মন্দা গেলে ইউটিউবে কমলা চাষের বিভিন্ন ভিডিও দেখে ইচ্ছেশক্তি
বৃদ্ধি পায়। সমতল ভ‚মিতে কমলা চাষ খুবই অসম্ভব ও চ্যালেঞ্জিং ছিল।
সেটাই গ্রহন করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কমলার গাছ সংগ্রহ
করি।
মিঠু বলেন, বাগান করতে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
গাছগুলোতে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। এখন অনেক ভালো লাগে। একেকটি
গাছ দেখলে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। যখন দ‚র-দ‚রান্ত থেকে লোকজন কমলা
বাগান দেখতে আসে তখন নিজেকে সফল মনে হয়। মিঠুর মিশ্র
বাগানে সব সময় সহযোগিতা করেন তার সহধর্মিণী পিনাকী
প্রামাণিক।
মিঠুর সহধর্মিনী পিনাকি প্রামানিক বলেন, আমরা প্রথমে অনেক
চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু করেছিলাম। তবে এখন ভালো লাগে। এ বাগানেই
কাটে আমাদের অধিকাংশ সময়। কমলা চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে
পারলে কৃষিক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। দার্জিলিং কমলার স্বাদ
মানুষ এ দেশ থেকেই পাবে। কমলা চাষে খরচ অত্যন্ত কম।
দর্শনার্থী শুভ, সাগর, মুকুল, বাদল, মোতালেব, সর্ণা, রবিন, হাসিবুল,
আ: খালেক, কায়েম সহ কথা হয় অনেকের সাথে। তারা কমলার বাগান দেখে
অভিভ‚ত। এমন কমলার বাগান দেখে কেউবা বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ
করেন।
কেউ কেউ কমলা কিনে নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খন্দকার ফরিদ জানান,
পাহাড়ি ফল কমলা সিংড়া উপজেলায় চাষাবাদ শুরু হয়েছে। মিঠু এই ফল
চাষ করে সফলতার অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছেন। কৃষি অফিসের
পরামর্শ নিয়ে শুরু করেছিলেন তিনি। বর্তমানে তার গাছে অনেক কমলা
। সমতলের চাষিদের অন্যতম লাভজনক একটি ফল।