রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে তৃণমূল বিএনপি

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে তৃণমূল বিএনপি

নিউজ ডেস্ক:
‘তৃণমূল বিএনপি’তে যোগ দিয়ে নেতৃত্ব নিয়েছেন বিএনপির সাবেক নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার। তাঁরা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দলটির জাতীয় কাউন্সিল। কাউন্সিলে উপস্থিত হয়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার।

গত কয়েক দিন ধরেই গুঞ্জন ছিল, এই দুই নেতা তৃণমূল  বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।

যোগ দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শমসের মবিন চৌধুরী দলটির চেয়ারপারসন এবং তৈমূর আলম মহাসচিব নির্বাচিত হন। এ ছাড়া দলটির প্রতিষ্ঠাতা বিএনপির আরেক সাবেক নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা দলটির নির্বাহী চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। কাউন্সিলে তৃণমূল বিএনপির ২৭ সদস্যের আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।

শমসের মবিন চৌধুরী ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে ২০১৮ সালে বিকল্পধারায় যোগ দেন। শুরুতে সক্রিয় থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে দলটির কার্যক্রমে তাঁকে দেখা যায়নি। অন্যদিকে তৈমূর আলম খন্দকার ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি।

২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে লিখিত আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু দল থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তা আজও অর্জিত হয়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আর দুর্নীতি জনগণকে অতিষ্ট করে তুলেছে।

আমি দল বদলালেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি বদলে যাবে না।’

তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল শব্দটি আমার খুবই পছন্দের। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের অবজ্ঞার জবাবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করে সফল হয়েছিলেন। তৃণমূল বিএনপি একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল। এটি জনগণের দল, এক-এগারোর মতো কিংস পার্টি নয়।’

কাউন্সিল শেষে শমসের মবিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা পেলে দলীয় সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। তাই এ দাবিও আমরা তুলব না।’ তিনি বলেন, ‘দল মাত্র সংগঠিত হয়েছে। মর্যাদাবান ও জনপ্রিয় অনেক নেতা এই দলে যোগ দেবেন।’

কাউন্সিলে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘বিএনপি আমাকে বহিষ্কারের পর দেড় বছর অপেক্ষা করেছি। তৃণমূল বিএনপিতে কাউকে এভাবে অবহেলা করা হবে না। এই দল জনগণের রাজনীতি করবে। কোনো প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি হবে না।’

এর আগে মিলনায়তনের বাইরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অন্তরা সেলিমা হুদা। ২০১৫ সালে তৃণমূল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যুর পর গত ১৬ মে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন অন্তরা হুদা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অন্তরা হুদা বলেন, ‘আমার বাবার সহযোদ্ধা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলমকে তৃণমূল বিএনপিতে স্বাগত জানাই। তাঁদের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আমাদের দলকে আরো শক্তিশালী করবে। আমার বাবা নাজমুল হুদা ছিলেন একজন জননেতা এবং কর্মীবান্ধব। বিএনপি সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও জনকল্যাণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়ায় তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।’

কাউন্সিল উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কয়েক শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগ সিলেট থেকে আসা শমসের মবিন চৌধুরী এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা তৈমূর আলম খন্দকারের সমর্থক।

কাউন্সিলস্থলে কথা হয় তৈমূর আলম খন্দকারের সমর্থক তাজুল ইসলাম ও মো. মামুনের সঙ্গে। নারায়ণগঞ্জ দেওভোগ এলাকায় তাঁদের বাড়ি।

কালের কণ্ঠকে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিএনপি করতাম। এখনো মানসিকভাবে বিএনপির পক্ষে। তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের নেতা। তাই তাঁর সঙ্গে আছি।’

সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা হোসেন আহমেদ কাউন্সিলে যোগ দিয়েছেন। পেশায় স্কুল শিক্ষক। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘শমসের মবিন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে বীরবিক্রম খেতাব পেয়েছেন। বিদেশের মাটিতে দেশের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর ডাকে আমরা সম্মেলন সফল করতে এসেছি।’

কাউন্সিলে তরীকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, গণ আজাদী লীগের আতাউল্লাহ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

তৃণমূল বিএনপির নতুন কমিটিতে কে এম জাহাঙ্গীর মজুমদারকে কো-চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাবিবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার, সালাম মাহমুদ ভাইস চেয়াম্যান, আক্কাস আলী খান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, রেজাউল করিম, মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক, রোকসানা আমিন সুরমা যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …