নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে কনস্ট্রাকশন প্লাম্বারসহ বিভিন্ন ট্রেডে কর্মী
বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে দেখা দিয়েছে জনবলের অভাব। বিশেষ করে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন কারিগরি বিষয়ে অভিজ্ঞ জনবল।
এতেই বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার শ্রমবাজার হয়েছে জার্মানি। কর্মী সংকটে থাকা জার্মানি ওয়েল্ডিং, কন্সট্রাকশন, প্লাম্বার, কারপেন্টারসহ বিভিন্ন ট্রেডে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি। জানা যায়, কয়েক বছর ধরেই জার্মানিতে কর্মী সংকটের বিষয়ে আলোচনা চলছিল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিয়মনীতির কারণে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে জটিলতাও তৈরি হয়। কিন্তু জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের মতে, শ্রমবাজারে প্রবেশকারী তরুণদের তুলনায় বেশি বয়স্ক কর্মী অবসর গ্রহণ করছেন। দক্ষ কর্মীর ঘাটতি এতটাই গুরুতর হয়ে উঠেছে, যে কোনো সময় এটি নাটকীয়ভাবে অর্থনীতিকে খুব দুর্বল করে দিতে পারে। সেজন্য এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর অন্তত ৪ লাখ দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে।
চলতি মাসের শুরুতেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ কর্মী সংকট কাটাতে বিদেশি কর্মী নেওয়ার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, জার্মানির উন্মুক্ত অর্থনীতি পৃথিবীবিখ্যাত। আমাদের শিল্পের উন্নয়নে এটা দারুণ ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে সারা বিশ্বের শ্রম ও দক্ষ শ্রমিকের বাজার হিসেবেও আমাদের দেশ বেশ আকর্ষণীয়। তাই সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধীদের বিষয়ে বলতে চাই, তারা দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ সংকটের বিষয়টি বুঝবে না। শিল্পকে মজবুত করতে হলে আমাদের বিদেশি দক্ষ জনবল আনার বিকল্প দেখছি না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জার্মানিসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের চারটি দেশ বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। বৈধ পথে ইউরোপে অভিবাসনে সহায়তার জন্য ইইউ ২০২১ সালে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ নামে বিশেষায়িত কর্মসূচি শুরু করেছে। এর আওতায় থাকা সাত দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, নির্মাণ খাত, পর্যটন ও কৃষি- প্রাথমিকভাবে এই ছয় খাতে দক্ষ কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাবে। এখন বাংলাদেশ থেকে কোন প্রক্রিয়ায় লোক পাঠানো হবে, তা নিয়ে ইইউর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, বেসরকারিভাবে জার্মানির কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (বিডি)-এর কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে ৩০০ দক্ষ কর্মী নেওয়ার চাহিদাপত্র পাওয়া গেছে। এ চাহিদাপত্রের বিপরীতে ওয়েল্ডিং, কন্সট্রাকশন, প্লাম্বার, কারপেন্টারসহ কয়েকটি ট্রেডে দক্ষ কর্মীদের ইন্টারভিউ নিতে চলতি সপ্তাহেই জার্মান কোম্পানির প্রতিনিধিরা আসছেন। কন্সট্রাকশন ওয়ার্কারদের বেতন হবে ১৫০০ ইউরো। ওয়েল্ডিং ওয়ার্কারদের বেতন হবে ১০০০ ইউরো। কর্মীদের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা কারিগরি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।