নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১৯ জন দৃষ্টি ত্রুটিজনিত সমস্যায় ভুগছে বিশ্বব্যাপি যার সংখ্যা প্রতি শতে ৩০ জন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অন্ধত্ব নিবারণের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। পঞ্চাশোর্ধ জনগোষ্ঠির মধ্যে অন্ধত্বের হার যেখানে ভারতে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ (২০১৫-২০১৯) এবং নেপালে ২ দশমিক ৫ শতাংশ (২০১২) সেখানে আমাদের দেশে ১ দশমিক ৫ শতাংশ (২০২০) এবং ত্রিশোর্ধ জনগোষ্ঠির মধ্যে যেখানে পাকিস্তানে অন্ধত্বের হার ২ দশমিক ৭ শতাশ (২০০২) সেখানে আমাদের দেশে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। দেশব্যাপী অন্ধত্ব জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ন্যাশনাল আই কেয়ার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘দেশব্যাপী অন্ধত্ব জরিপ-২০২০’ পরিচালনা করা হয়। সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) জরিপটি পরিচালনা করে। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশের ৬৪ টি জেলার গ্রাম ও শহর এলাকার ১৮,৪৫৪ জন নারী ও পুরুষ জরিপে অংশগ্রহণ করেন। জরিপের ফলাফলে দেখা যায় যে, বিগত ২০ বছরে বাংলাদেশে অন্ধত্বের হার শতকরা ৩৫ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। চিকিৎসাবিহীন ছানি ছিল অন্ধত্বের প্রধান কারণ (৭১ শতাংশ)। এছাড়াও অন্যান্য প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা, এবং বার্ধক্য জনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ইত্যাদি অন্যতম। ১৯৯৯-২০০০ সালে পরিচালিত জরিপের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ছানিজনিত অন্ধ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার জন যা ২০২০ সালে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার জন।
জরিপ কার্যক্রমের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা প্রফেসর সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মো. শরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক এবং এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অফথালমোলজির সভাপতি প্রফেসর ডা. আভা হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মোস্তাফা।
সিআইপিআরবি নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. একেএম ফজলুর রহমান জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত ২০ বছরে বাংলাদেশ চক্ষুচিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, যা উক্ত জরিপের মাধ্যমে প্রতীয়মান। তিনি চক্ষু সেবা সহ স্বাস্থ্য সেবার সামগ্রিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের সরকারের দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।