নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ভোজ্য তেলের বাজারে চার স্তরের প্রতিটিতেই অনিয়ম হচ্ছে। এর কষ্ট বইতে হচ্ছে ভোক্তাদের। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার মৌলভীবাজার থেকে পুরো বাংলাদেশের ভোজ্য তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আমরা সেই দুই বাজারের প্রভাব ভাঙছি।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম চেম্বারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আমদানিকারক, পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে শফিকুজ্জামান বলেন, ‘অস্থিরতা কমাতে আমরা ভোজ্য তেলের শুল্ক প্রত্যাহার করেছি এবং দর বেঁধে দিয়েছি। কিন্তু শুল্ক প্রত্যাহারের আগে বাজারটা অস্থির করল কে, সেই খোঁজ আমরা নিচ্ছি। আমাদের বলা হলো, শুল্ক প্রত্যাহারের তেল বাজারে আসেনি। কিন্তু আমরা খোঁজ নিয়ে দেখলাম, এক লাখ টন তেল বাজারে ঢুকেছে। ফলে তথ্যের একটি ঘাটতি দেখা গেল। এই ঘাটতি দূর করতে আমরা একটি অ্যাপস করছি। যেখানে রিয়েল টাইম ডাটা থাকবে। এরই অংশ হিসেবে আমরা আজ (রবিবার) চট্টগ্রাম কাস্টমসে যাব। এরপর চট্টগ্রাম বন্দরে বসব। দেখব শুল্ক প্রত্যাহারের আগে-পরে কে কী পরিমাণ ভোজ্য তেল আমদানি করেছে। আর অ্যাপসের মাধ্যমে আমদানি করা তেলের সঠিক হিসাব আমরা পাব। ’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি ভোজ্য তেলের জাহাজ এলো আর কজন ব্যবসায়ী সেটি দু-চার দিন আটকে দিয়ে তেলের দাম ১০-২০ টাকা বাড়িয়ে দিলেন, এমন কার্যক্রম অ্যাপসের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে। এতে করে জাহাজ আসা থেকে শুরু করে কাস্টমসে শুল্কায়ন, বন্দর থেকে ছাড়, রিফাইনারিতে পরিশোধন এবং পরিশোধিত তেল বাজারে যাওয়া পর্যন্ত হিসাব থাকবে।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীদের অনেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের সমালোচনা করেন। একই সঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জরিমানা
আদায় বন্ধের দাবি জানান। জবাবে শফিকুজ্জামান বলেন, ‘উপস্থিত ব্যবসায়ীরা আমাকে নিশ্চিত করেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দর মেনেই তেল বিক্রি করবেন। কাল থেকেই অভিযান বন্ধ করে দেব। চার স্তরে অনিয়ম খুঁজতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। চারটি বাজারে আমরা গিয়ে দেখেছি, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করছে। এ জন্য আমরা একটি সমাধানে যেতে চাই। আমরা একটি অ্যাপস করব, যেটার মাধ্যমে আমরা সঠিক হালনাগাদ তথ্য পাব। ’
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ডিউটি স্তর সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হলে আমদানি বৃদ্ধি পাবে এবং বর্তমান সংকট কেটে যাবে। ঈদের তিন থেকে ছয় মাস আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে। পাইকারি ও খুচরা সব ক্ষেত্রে ক্রয় ও বিক্রয়মূল্যের তালিকা প্রকাশ এবং উভয়ের মধ্যে দামের পার্থক্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা উচিত। পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে ব্যবসায়ী, প্রশাসনসহ সবার উচিত সরকারকে সহযোগিতা করা।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পবিত্র রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা যাবে।