নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অমিমাংসীত ইস্যু তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি আছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের জানান, কিছুদিনের মধ্যে বিজেপির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে আসার আগ্রহ গ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হবে।
বৈঠকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনের তৈরি বিশেষ সংস্করণের হাতঘড়ি উন্মোচন করেন ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে জাতির পিতার ছবি সংবলিত দুইটি হাতঘড়ি উপহার হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে তুলে দেন ভারতের হাইকমিশনার দোরাইস্বামী। ভারতের নামী ঘড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাইটান ভারতীয় হাই কমিশনের জন্য বিশেষ সংস্করণের ঘড়িগুলো তৈরি করেছে।
সেসময় ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জাতির পিতা হলেও ভারতে তিনি হিরো। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অপসারণে ইসলামী দলগুলোর দাবির বিষয়টি সরকার পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবাদুল কাদের একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দেন।
তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখনও করোনা আক্রান্ত। তিনি এখন সামনে আসবেন না। উনি সুস্থ হলে এটা নিয়ে হয়তো আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন বা ওনার সঙ্গে আপনারা আলাপ করতে পারেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উদযাপনের সূচনাকালে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে সাহসী নেতা হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন সবার জন্য অনুপ্রেরণা ছিল। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনারের উদ্যোগের জন্য ভারত সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুকে সম্মানিত করার যে প্রয়াস তা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ও জনগণকে সম্মান করা। আর এটি পারস্পরিক ও আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠা সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেয়াল ভেঙ্গে দু’দেশের মধ্যে এখন রচিত হয়েছে আস্থা ও সৌহাদ্যের সেতু। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার মাধ্যমে অনেক অমীমাংসিত সমস্যার বিষয়ে সমাধান হয়েছে। আমাদের সড়ক যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু চলমান আছে সেগুলো এগিয়ে নিতে আমাদের কথা হয়। প্রকল্পের অগ্রগতির জন্য হাইকমিশনারকে বলেছি। দুই দেশের সরকার পিপল টু পিপল কানেক্টিভিটি বাড়াতে আন্তরিক।
ওবাদুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি পুনবিন্যাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের রক্তের রাখি বন্ধনে আবদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও জনগণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কাজেই আমাদের সম্পর্কটা অত্যন্ত নিবিড়। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধির মধ্যে যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তার ধারাবাহিকতায় দুই দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিতে এসে তা অধিক প্রমাণিত’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কাদের।
তিনি বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল ও ভবিষ্যৎমুখী নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভারতীয় হাই কমিশনারের এই উদ্যোগের জন্য ভারত সরকার ও দেশটির জনগণকে ধন্যবাদ জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বরেন, আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুকে সম্মানিত করা যে প্রয়াস তা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ও জনগণকে সম্মান করা। আর এটি পারস্পরিক ও আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় হাই কমিশনারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জাতির পিতা হলেও তিনি ভারতীয় জনগণের কাছে বীর। এটাই স্বাভাবিক যে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে আসার পথে ভারতীয় জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমজনকে যে উষ্ণতা ও ভালবাসা দেখিয়েছিলেন তেমনিভাবে তারা মুজিবর্বষও উদযাপন করতে চান।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ মুজিবর্বষ উদযাপনের সূচনাকালে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে সাহসী নেতা হিসাবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুর জীবন সবার জন্য অনুপ্রেরণা ছিল।