শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / তিন মেগা প্রকল্পে নতুন চেহারা পাবে বৃহত্তর চট্টগ্রাম

তিন মেগা প্রকল্পে নতুন চেহারা পাবে বৃহত্তর চট্টগ্রাম

নিউজ ডেস্ক:

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য অক্টোবরের শুরুতেই মন্ত্রী পরিষদের আকার ছোট করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পর আর কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যায় না। তাই দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উদ্বোধন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চট্টগ্রামে চলমান তিনটি মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

এই তিন মেগা প্রকল্পের মধ্যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এবং দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইন আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অপর মেগা প্রকল্প–নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গার টানেল রোড পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজও আগামী অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পের বর্তমান কাজের অবস্থা দেখে মনে হয়–অক্টোবরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তবে সিডিএর টার্গেট নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে ডিসেম্বরে যান চলাচল শুরু করার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হলে কোনো ঝক্কি ছাড়াই সরাসরি যাওয়া যাবে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর। বঙ্গবন্ধু টানেল হয়ে ধরা যাবে কক্সবাজারের পথও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শেষ হলে চট্টগ্রাম মহানগরের যোগাযোগ অবকাঠামোতে আমূল পরিবর্তন আসবে। এটি একই সঙ্গে সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড ও চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর করবে। সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে। তিন মেগা প্রকল্প চালু হলে চট্টগ্রামসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের কক্সবাজার এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা–বাণিজ্য সম্প্রসারণে আমূল পরিবর্তন আসছে।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ইতোমধ্যে ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধন করবেন বলে জানালেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের সম্ভাব্য সময় ধরে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে টানেলের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি দুই শতাংশ কাজ শিগগিরই শেষ হবে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, টানেল নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন টানেলে বড় ধরনের কোনো কাজ নেই। চলছে শেষ মুহূর্তের টুকিটাকি কাজ।

এদিকে গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর সেতু ভবনে মতবিনিময় সভা শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, সেপ্টেম্বরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলটি উদ্বোধন করবেন।

এদিকে আগামী সেপ্টেম্বরে দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইনেরও উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। গত ৬ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর এ কথা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে নতুন এই রেললাইনের উদ্বোধন করতে পারেন। কক্সবাজারে দ্রুতগতিতে রেল যাওয়ার জন্য কালুরঘাট সেতু সংস্কার করা হচ্ছে জানিয়ে রেলসচিব বলেন, কক্সবাজার রেল লাইন চালু হলে সারাদেশের মানুষের ট্রেনে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।

এই ব্যাপারে দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমাদের টার্গেট আছে আগস্টে কাজ শেষ করার। সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।

বঙ্গবন্ধু টানেলের এক প্রান্তে চট্টগ্রাম শহর, অপর প্রান্তে আনোয়ারা উপজেলা। টানেল চালুর মধ্য দিয়ে আরেকটি শহরে রূপ নিচ্ছে আনোয়ারা। ইতোমধ্যে আনোয়ারা উপজেলায় জমির দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। টানেল সংযোগ সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে ছোটবড় অসংখ্য শিল্প–কারখানা। টানেল চালু হলে কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিন মিনিট। বেঁচে যাওয়ায় সময় অর্থনীতিতে গতি আনবে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরী এবং পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে দোহাজারী–কক্সবাজার লাইন চালু হলে রাজধানী ঢাকার সাথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি কক্সবাজার কেন্দ্রিক মৎস্য শিল্প–শুটকিসহ অন্যান্য শিল্প ও প্রাণিজ সম্পদের বিকাশ ঘটবে।

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত 

নিজস্ব প্রতিবেদক নন্দীগ্রাম ,,,,,,,,,,বগুড়ার নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন হেমন্তকাল। মাঠ …