নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার ছাড়বে। বিপরীত দিকে নিউজলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে রোববার ও বুধবার। ভাড়া কেবিনে ৩৩ ডলার, এসি চেয়ার ২২ ডলার। আর চার সিটের বার্থের প্রতিটির মূল্য হবে ৪৪ ডলার।
বাংলাদেশ রেল সূত্র জানিয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেন ছাড়বে রাত পৌনে ১২টায়। পৌনে ১১ ঘণ্টায় ৫৩৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পরদিন সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে পৌঁছাবে।
ট্রেন উদ্বোধনের জন্য ভারত সফরে রয়েছেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তার সঙ্গে আছেন বাংলাদেশে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী।
গত বছর ২৭ মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধন করেন। সেদিন ট্রেনটি চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে। তবে করোনা মহামারিতে ভিসা প্রক্রিয়া সীমিত হয়ে পড়ায় ট্রেনটি এতদিন নিয়মিত চলাচল শুরু করতে পারেনি।
বাসস জানিয়েছে, বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং তার ভারতের সমকক্ষ অশ্বিনী বৈষ্ণব যৌথভাবে ভার্চুয়াল ফরম্যাটে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর রেল ভবন থেকে ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ যাত্রার উদ্বোধন করবেন।
সময়সূচি ও ভাড়া
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের পরিচালক অসীম কুমার তালুকদার নিউজবাংলাকে জানান, ট্রেনটিতে দিনে যাওয়ার সময় প্রতি কেবিনে আসন মূল্য হবে ৩৩ ডলার, এসি চেয়ার ২২ ডলার। আর রাতে চার সিটের বার্থের প্রতিটির মূল্য হবে ৪৪ ডলার।
ট্রেনে মোট আসন থাকবে ৪৫৬টি। এতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চারটি কেবিন কোচ ও চারটি চেয়ার কার থাকবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ট্রেনটি ভারতের দিকের শেষ স্টেশন হলদিবাড়িতে ১০ মিনিট থামবে। আর বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য থামবে আধা ঘণ্টা। এ ছাড়া এটির আর কোনো বিরতি নেই।
প্রথম দিন ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি ছাড়ার পর ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশনে ভারতীয় সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছাবে। এরপর ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে রাত ১টা ৫ মিনিটে ফের ছাড়বে। বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনটি চিলাহাটি পৌঁছাবে আর সেখান থেকে ছাড়বে রাত ২টা ২৫ মিনিটে।
নিয়মিত যাত্রায় ট্রেনটি ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে। চিলাহাটি পৌঁছাবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে। সেখান থেকে ছাড়বে সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে। এরপর ট্রেনটি ভারতীয় সময় ভোর ৬টায় হলদিবাড়ি পৌঁছবে। হলদিবাড়ি থেকে ৬টা ৫ মিনিটে ছাড়বে। ভারতীয় সময় ৭টা ১৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ট্রেনটির ওয়াটারিং ও পরিষ্কার ঢাকা স্টেশনে হবে।
মিতালী এক্সপ্রেস ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় ট্রেন। ইতিমধ্যে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস দীর্ঘ দুই বছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বন্ধ থাকার পর গত রোববার আবার চালু হয়েছে।
ঢাকা-কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস প্রথম চালু হয় ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু ও লালন সেতু হয়ে দর্শনা-গেদে রুটে এই ট্রেন চলাচল করে সপ্তাহে পাঁচ দিন।
২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর খুলনা-কলকাতা বন্ধন ট্রেন চালু হয়। বেনাপোল-পেট্রাপোল রুটে সপ্তাহে দুই দিন চলাচল করে এটি।
একসময় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের আটটি রেল সংযোগ ছিল। পাকিস্তান আমলে এসব লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়। দুই দেশের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্ধ থাকা লাইনগুলো চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশের সরকার।
এ ছাড়া বিরল-রাধিকাপুর, রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ রুটে মালবাহী ও পার্সেল ট্রেন চলে।