নিউজ ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার দুর্বিসহ যানজট নিরসনে আরেকটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প’। এটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্পটি বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) ৩৪তম বৈঠক বুধবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, অনেক কোম্পানি এখন এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং টেন্ডার হলে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উপযুক্ত দরদাতা নির্বাচন করা হবে।
আরেফিন বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) কাছে আসবে। তিনি জানান, এক্সপ্রেসওয়েটি উপর দিয়ে নির্মাণ করা হবে এবং এটি নির্মাণে আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের সম্ভাব্য রুট ঢাকা-আরিচা (বলিয়ারপুর) থেকে কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলা হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দেশের পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যানবাহন ঢাকা শহরে প্রবেশ না করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২০টি জেলায় সরাসরি চলাচল করতে পারবে। এর ফলে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আগামী বছরের ডিসেম্বরে এর একটি অংশ চালু করার আশা করছে সরকার। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১টি র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার
তিন ধাপে এর কাজ সম্পন্ন হবে। প্রথম ধাপে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত অংশের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় ধাপে বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। তৃতীয় ধাপে মগবাজার রেলক্রসিং থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।
এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কো ৮৪ লাখ টাকা। বাকি টাকা দিচ্ছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।