ঢাকা শহরের পশ্চিমাংশে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। ৫৫ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থের ‘আধুনিক’ এই সড়কে দ্রুতগতির যান চলাচলের জন্য লেন থাকবে চারটি। দুই পাশে দুটি করে সার্ভিস লেন ছাড়াও মেট্রোরেলের জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে। দুই পাশে পরিষেবা সংযোগের জন্য তৈরি করা হবে ‘টানেল’।
সড়কটি শুরু হবে আবদুল্লাহপুর থেকে। বিরুলিয়া, গাবতলী, চুনকুটিয়া, পোস্তগোলা, নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া ও শিমরাইল হয়ে ঢাকার ডেমরায় গিয়ে শেষ হবে এটি। প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থায়ন সাপেক্ষে আগামী অর্থবছর থেকে সড়কের কাজ শুরু হতে পারে। চক্রাকার সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৫ কিলোমিটার। ঢাকা সার্কুলার রুট, পার্ট–২ নামের প্রকল্পের আওতায় ৪৭ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশের কাজ করবে সওজ। বাকি অংশ (আবদুল্লাহপুর থেকে ধউর, চুনকুটিয়া থেকে পোস্তগোলা, শিমরাইল থেকে ডেমরা) পৃথক তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে সওজ ও সেতু কর্তৃপক্ষ।
সওজ সূত্র জানায়, গত বছরের মে মাসে চক্রাকার সড়ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়। এরপর সড়কের জন্য প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) তৈরি করা হয়। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে আছে। প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নে আনুমানিক ১২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণসংশ্লিষ্ট কাজে। জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ৬১ দশমিক ৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ইতিমধ্যেই জমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু করেছে সওজ।
যেমন হবে চক্রাকার সড়ক : প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নের পর চক্রাকার সড়কের প্রস্থ হবে ৫৫ দশমিক ৮ মিটার। এর মধ্যে উভয় পাশে দুই লেন করে চার লেনের হাইওয়ে এবং হাইওয়ের দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি সার্ভিস লেন হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে যাতে সড়কটি ধরে মেট্রোরেল করা যায়, সে জন্য ১০ মিটার করে জায়গা রাখা হবে। আর বাস-বের জন্য সড়কের কিছু অংশে সাড়ে তিন মিটার করে জায়গা থাকবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, সড়কটি হবে খুবই আধুনিক। এ জন্য সড়কের দুই পাশ দিয়ে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ অন্যান্য সেবার লাইনের জন্য ‘ইউটিলিটি ডাক্টস বা টানেল’ তৈরি করা হবে। এতে সময়-সময় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রয়োজন হবে না। হাঁটার জন্য থাকবে ফুটপাতও। ইউটিলিটি ডাক্টস ও ফুটপাতের মোট দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ৮৭ কিলোমিটার।
এ ছাড়া সড়কটির এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাতায়াতের জন্য ৪০৭ মিটার পাতালপথ থাকবে। পাতালপথ দিয়ে মানুষের পাশাপাশি যানবাহনও পার হতে পারবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে এ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯টি স্লুইসগেটেরও সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করতে হবে।