ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে। ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক এডিস মশা। এডিস মশার দেহে সাদা কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে, যে কারণে এটিকে টাইগার মশা বলা হয়। এই জাতীয় মশা মাঝারি আকারের হয়ে থাকে এবং এর অ্যান্টেনা বা শুঙ্গটি কিছুটা লোমশ দেখতে হয়।এডিস মশার অ্যান্টেনায় অনেকটা দাড়ির মত থাকে। পুরুষ মশার অ্যান্টেনা স্ত্রী মশার চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি লোমশ দেখতে হয়।
এডিস মশা শুধু মানুষের পায়েই কামড়ায় – সম্প্রতি বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এডিস মশা যে শুধু পায়ে কামড়ায় – এই দাবি ভিত্তিহীন। মশা সাধারণত মানুষের পায়েই কামড়ায়, কারণ সাধারণত শরীরে পা’ই অনাবৃত থাকে। তবে শুধু যে পায়েই মশা কামড়ায়, বিষয়টি এরকম নয়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এডিস মশা কামড়ায়। তবে কামড়ানোর হার সবচেয়ে বেশি থাকে সূর্যোদয়ের পর দুই-তিন ঘন্টা এবং সূর্যাস্তের আগের কয়েক ঘন্টা।
এডিস মশা কামড়ালেই সব সময় ডেঙ্গুজ্বর হয়না। পরিবেশে উপস্থিত ভাইরাস এডিস মশার মধ্যে সংক্রমিত হলে সেই মশার কামড়ে ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এডিস সাধারণত একাধিক ব্যক্তিকে কামড়ায়। ডেঙ্গু ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির শরীর থেকে এডিস মশার মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার পর ঐ মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়।
এডিস মশা সাধারণত ডিম পাড়ে স্বচ্ছ পানিতে। বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন পয়েন্টে, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা টায়ার কিংবা অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের বাড়ির আশেপাশের এসব জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত যাতে কোথাও কোনো পানি না জমে। সর্বোপরি আপনার সচেতনতা পারে আপনার পরিবার ও সমাজকে ডেঙ্গু মুক্ত রাখতে।