রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / ডেঙ্গুতে রাবি ছাত্রের রামেকে মৃত্যু, ভাইয়ের শোকে বাড়িতে মারা গেল বোন

ডেঙ্গুতে রাবি ছাত্রের রামেকে মৃত্যু, ভাইয়ের শোকে বাড়িতে মারা গেল বোন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সন্ধায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ মৃধা। মুরাদ মৃধা খাটাসখৈল গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছোট ছেলে। রাতেই মুরাদের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্র তার চাচাতো বোন দোলেনা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হন। আজ সকালে তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাটোর সদর হাসপাতালে মারা যান। মঙ্গলবার(৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুরাদ মৃধার গ্রামের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামের খাটাসখৈল গ্রামে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১১টায় জানাযা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। ১০ দিন আগে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি কিডনি জটিলতায় ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন। মুরাদের বাবা আব্দুস সাত্তার মৃধা জানান, তিনি অন্যের খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। গুড় বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি কোনো রকমে সংসার চালান। বাড়ি ঘর তেমন একটা করতে পারেননি। উপার্জনের বড় অংশ ব্যায় করেছেন দুই ছেলের পড়ালেখায়। বড় ছেলে মুন্না মৃধা। তিনি গত বছর মাস্টার্স শেষ করে স্কয়ার কোম্পানীতে কর্মকর্তা পদে চাকুরী করেন। ছোট ছেলে মুরাদ আহমেদ মৃধা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এক মাস আগে তাঁর অনার্স পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। তার স্বপ্ন ছিল পড়া লেখা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে শুরু করে মুরাদ। সাত্তার মৃধা বলেন, ‘মুরাদ ২৬ জানুয়ারী বাড়ি এসে মুরাদ জ্বরে আক্রান্ত হয়। সাথে বমি ছিল। স্থানীয় একজন চিকিৎসককে দেখালে তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে দেন। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়ে। কিন্তু পাঁচদিন চিকিৎসা করার পরও সুস্থ না হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে লিভার ও কিডনি সমস্যা ধরা পড়ে। গত বৃহষ্পতিবার তার ডায়ালাইসিস শুরু হয়। কিন্তু তাতেও তিনি সুস্থ হননা। সোমবার তাকে দ্বিতীয় ডায়ালাইসিসে নেওয়া হলে অবস্থার আরও অবনতি হয় এবং সন্ধায় তাঁর মৃত্যু হয়। রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে শতাধিক সহপাঠি তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেন। সাত্তার মৃধা আরও বলেন, ‘আমার ছেলে মুরাদ সবার কাছেই খুব প্রিয় ছিলো। সোমবার তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে মুরাদের চাচাতো বোন (দোলেনা বেগম) হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আজ ভোরে তিনিও মারা গেছেন।’ মুরাদের চাচা আফছার মৃধা জানান, আমাদের পৈত্রিক জমি জমা তেমন ছিল না। তবুও তাঁর ভাই (মুরাদের বাবা) তাঁর ছেলেদের ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন। এমনকি সুদের ওপর টাকা ধার নিয়ে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ ও খাবারের ব্যবস্থা করতেন। তিনি বলেন, যে দিন অনার্সের ফল প্রকাশ হয় সেদিন মুরাদ বাড়িতে ছিল। আমাকে নিজ হাতে মিষ্টি খাওয়ায় মুরাদ। আমার কাছে দোয়া চেয়ে বলেছিল, সে বিসিএস কর্মকর্তা হবে। মুরাদ আহমেদের কলেজ শিক্ষক রুহুল আমীন বলেন, ‘মুরাদ আমার খুব প্রিয় ছাত্র ছিল। টানা তিন বছর ওকে পড়িয়েছি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও ওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। কয়েক দিন আগেও ফোন করে আমার খোঁজখবর নিয়েছে। ওর মতো ভদ্র ও বিনয়ী ছাত্র পাওয়া ভাগ্যের বেপার।

আরও দেখুন

লালপুরে কুরেছান বেগমের ইন্তেকাল 

নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুর,,,,,,,,,,,,,,দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার নাটোরের লালপুর প্রতিনিধি ও মডেল প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সাহীন …